মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বদলে যাচ্ছে কূটনৈতিকপাড়

নিশ্চিত হবে নিরাপত্তা, কমবে যানজট

লাকমিনা জেসমিন সোমা

বদলে যাচ্ছে কূটনৈতিকপাড়

আলাদা গুরুত্ব দিয়ে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় চলছে বিশেষ সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ ছবি : জয়ীতা রায়

পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার কূটনৈতিক জোনের চিত্র। আলাদা গুরুত্ব দিয়ে এই ভিআইপি এলাকায় চলছে বিশেষ সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ। কূটনৈতিক ব্যক্তি ছাড়াও বিদেশি নাগরিকদের কাছে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এই বিশেষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্য দিয়ে কূটনৈতিক এলাকায় নিরাপত্তা ও নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্পের পুরো নাম ‘গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার রাস্তা, নর্দমা এবং ফুটপাথ নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্প।’

১৯৯ কোটি ৯৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে। এই কাজে সরকারি বরাদ্দ থেকে আসছে ১৩৯ কোটি ৯৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা এবং ডিএনসিসির নিজস্ব অর্থায়ন ৫৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় নতুন করে আধুনিক সিস্টেমে নর্দমা এবং ফুটপাথ নির্মাণ করা হচ্ছে। চলছে রাস্তাঘাটের সংস্কার কাজও। একই সঙ্গে সড়কের জলাবদ্ধতা এবং বনানী এলাকার দূষণ নিরসনে বিকল্প ড্রেনেজ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ওই এলাকার যানজট নিরসনেও কাজ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তা, ৮১ কিলোমিটার নর্দমা এবং ৫৭ কিলোমিটার ফুটপাথে কাজ করবে ডিএনসিসি। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ১১টি ধাপে।

সরেজমিন দেখা যায়, এরই মধ্যে আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেম নির্মাণের উদ্দেশে গুলশান-১ থেকে গুলশান-২ এর দিকে যেতে প্রধান রাস্তার পাশ কেটে ‘পাইপ ট্রেন্স’ বসিয়ে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। নগরবাসীর ভোগান্তি কমাতে এই পুরো কমপ্যাক্টের কাজ করা হচ্ছে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক মেশিনারিজ।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেন, কূটনৈতিক জোনে এমন আধুনিকভাবে ড্রেনেজ সিস্টেম নির্মাণ করা হচ্ছে যাতে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হবে। বর্ষাকালে ভারি বৃষ্টিতেও ওই এলাকায় আর পানি জমে থাকবে না। এ ছাড়া ভবিষ্যতে গুলশান-বনানীতে নর্দমা পরিষ্কার বা এই সংক্রান্ত অন্য কোনো কাজে আর কখনই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির প্রয়োজন হবে না। আধুনিক এই ড্রেনেজ সিস্টেমের পাশাপাশি সেখানে রাস্তা সম্প্রসারণেরও কাজ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাস্তা সম্প্রসারণসহ পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে গুলশান-বারিধারার দুঃসহ যানজটও কমে যাবে। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ থাকলে নানা দিক থেকে জনদুর্ভোগও কমবে।

তবে বর্তমানে পাইপ ট্রেন্স বসানোর কাজে বেশ গভীর পর্যন্ত রাস্তা খোঁড়ায় অনেকটা দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় তীব্র যানজট দেখা যাচ্ছে। ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, শেষবারের মতো কিছুটা দুর্ভোগ পোহালেও এই এলাকার মানুষ স্থায়ী সমাধান পাচ্ছেন— এটিই বড় কথা। ভবিষ্যতে এলাকার মানুষকে আর জলাবদ্ধতা নিয়ে ভাবতে হবে না।   

এ প্রসঙ্গে ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল সার্কেল) শরীফ উদ্দিন জানান, প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে গুলশান ও বনানী এলাকার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে আরসিসি পাইপ ও খোলা নর্দমা নির্মাণ কাজ চলছে। তিনি বলেন, এর আগে বিভিন্ন সংস্থার গভীর পাইপ বা নর্দমা নির্মাণের সময় অপরিকল্পিত খননের কারণে জনদুর্ভোগ দেখা দেয়।

অনেক সময় নির্মাণ কাজ চলাকালে রাস্তার ওপর বালু-মাটি বা রাবিশ ফেলে রাখায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ খননকৃত ট্রেন্স বালুর পরিবর্তে মাটি দিয়ে ভরাট করায় এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। আর সে কারণেই তারা এবার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রেখে আধুনিক পদ্ধতিতে এই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে তাদের কর্মীরা রাত-দিন খাটছেন বলেও জানান তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর