মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

খাসজমি দখলের মহোৎসব

আফজাল, গাজীপুর সিটি

খাসজমি দখলের মহোৎসব

গাজীপুরে সরকারি খাসজমি দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে একটি মহল। সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতা ও ভূমি অফিস কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে সরকারি লিজের নামে-বেনামে খাসজমি জলাশয় পুকুর ভরাট করে দখলযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যে। সরেজমনি ঘুরে জানা যায়, টঙ্গী ও গাজীপুরে প্রায় অর্ধশত খাস পুকুর ও শত শত বিঘা খাসজমি রয়েছে। একটি কুচক্রী মহল দিন দিন খাস পুকুর ও জলাশয় ভূমি ভরাট করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। গাজীপুরের টঙ্গী সাতাইশ এলাকায় ছায়াকুঞ্জ আবাসিক প্রকল্প ৫ ও ৬-এর নামে বিঘায় বিঘায় সরকারি খাসজমি ও জলাশয় ভূমি ভরাট করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে দাড়াইল মৌজায় ৬ বিঘা, সাতাইশ মৌজায় ৭ বিঘা ও গুশুলিয়া মৌজায় আরও ৫ বিঘাসহ প্রায় একুশ বিঘা জমি ভরাট করে নিজেদের দখলে নিয়েছে। এ বিষয়ে গাজীপুরা সাতাইশ এলাকার বাসিন্দা মাওলানা ইসমাইল হোসেন বলেন, ছায়াকুঞ্জের পরিচালক কামরুল একজন ভূমি ব্যবসায়ী, তিনি দাড়াইল সাতাইশ ও গুশুলিয়া মৌজায় দীর্ঘদিন ধরে জলাভূমি ভরাট করে আসছেন। সরকারিভাবে জলাশয় ভরাট অপরাধ সত্ত্বেও দখলের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ভরাট করছেন। এ ব্যাপারে ছায়াকুঞ্জের পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, উল্লিখিত মৌজায় জমি কিনেছে ছায়াকুঞ্জ। কয়েক বিঘা সরকারি খাসজমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে লিজ আবেদনের মাধ্যমে ভরাট করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে দুটি অর্ডার পেয়েছি আর একটি অর্ডার পেলেই আইনি ঝামেলা থাকবে না। আলমগীর নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, সাতাইশ, কাকিল সাতাইশ ও গুশুলিয়া মৌজায় আমার কেনা সম্পত্তি ২৩ একর ৪৬ শতাংশ। এর মধ্যে ছায়াকুঞ্জের কামরুল ২০০৯ সালে ১ একর ৫৪ শতাংশ জমির নামমাত্র মূল্যে বায়না করে আজও রেজিস্ট্রি করেননি। জমির টাকা চাইলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ছাড়া কামরুল অন্য জমির জাল দলিল বানিয়ে অন্যত্র বিক্রি করাসহ দখল অপরাধে লিপ্ত। এ ব্যাপারে থানায় একাধিক জিডি ও অভিযোগ রয়েছে। তবে কামরুল আলমগীরের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। এদিকে টঙ্গীর খাঁ-পাড়া এলাকায় সরকারি ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ৩ একর আশি শতকের বৃহৎ বলেশ্বর দীঘিটি ১৮৩৩ সালে খনন করা হয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে একটি অসাধু চক্র তা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের দখলযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী ঐতিহ্যবাহী ওই দীঘিটি পুনরুদ্ধারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ২৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আবেদন করেন। এ বিষয়ে টঙ্গী ভূমি কর্মকর্তা এস এম মান্নান বলেন, দখলকারীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর