মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

বর্জ্য ভোগান্তি কমাতে এসটিএস

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

বর্জ্য ভোগান্তি কমাতে এসটিএস

রাজধানীতে প্রতিদিন বর্জ্য উত্পন্ন হয় পাঁচ হাজার টনের বেশি। নগরবাসীকে আবর্জনার ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় তৈরি হয়েছে ৬৫টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)। ইতিমধ্যেই এর সুফল পেতে শুরু করেছে নগরবাসী। তাই নগরসেবাকে আরও গতিশীল করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে এসটিএস নির্মাণ করছে দুই সিটি করপোরেশন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ পর্যন্ত ডিএনসিসি এলাকায় ৫২টি এসটিএস চালু হয়েছে। জায়গার অভাবে আমরা নতুন স্টেশন তৈরি করতে পারছি না। ডিএনসিসির নিজস্ব জায়গা নেই। কেউ আমাদের জায়গা দিলে সেখানে এসটিএস তৈরি করে দেব। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০টি এসটিএস করছে। এর মধ্যে ছয়টি চালু রয়েছে আর পাঁচটি এ মাসেই চালু হবে। বাকিগুলোর কাজও প্রায় শেষ।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ২০০৯ সালে এসটিএস প্রকল্প নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে দরপত্রের মাধ্যমে মেসার্স টেক স্কোয়াড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু মামলা, এলাকাবাসীর বাধা, পরিবেশ অধিদফতর ও পরিবেশবাদীদের আপত্তিসহ নানা কারণে এ কাজ স্থগিত ছিল। পরে এর কার্যক্রম আবারও শুরু হয়েছে। যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারের উত্তর পাশের খালি জায়গায় এসটিএস নির্মাণের কাজ শুরু করলে স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দেয়। তাদের আশঙ্কা ছিল সেখানে এসটিএস নির্মাণ হলে বাজারে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে। ওসমানী উদ্যানে নির্মাণ করতে গেলে পরিবেশ অধিদফতর থেকে আপত্তি জানানো হয়। পান্থকুঞ্জে প্রায় অর্ধেক কাজ করা অবস্থায় পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) মামলা করলে আদালতের নির্দেশে কাজ স্থগিত হয়ে যায়। হাজারীবাগের ম্যাটাডোর এলাকায় কাজ করতে গেলে এক ব্যক্তি মামলা করেন। ডিএনসিসির উত্তরার জসীমউদদীন রোড ও রাজউক কলেজ এলাকায় নির্মাণ করতে গেলে এলাকাবাসী বাধা দেয়। মিরপুর কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় এসটিএস নির্মাণ কাজ শুরু হলে স্বার্থান্বেষী একটি মহল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এভাবে বাধার সম্মুখীন হওয়ায় এসটিএস নির্মাণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এসটিএস তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম কে বখতিয়ার বলেন, প্রতিদিনের আড়াই হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করা চ্যালেঞ্জিং কাজ। আমরা রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বর্জ্য পরিষ্কার করি সকাল হতেই পুরান ঢাকার কারখানার বর্জ্যে তা সয়লাব হয়ে যায়। মানুষ যতদিন সচেতন না হবে ততদিন রাজধানী পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে এসটিএসগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সর্বশেষ খবর