মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে সেই টাম্পাকো

আফজাল, টঙ্গী

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে সেই টাম্পাকো

গাজীপুরের টঙ্গীতে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সেই টাম্পাকো কারখানা। কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হওয়ার পরও শ্রমিকদের প্রতি মাসের বেতন-ভাতা দিয়ে যাচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এমন বিরল ঘটনা গাজীপুরে এই প্রথম। কাজ না করেও বেতন নিচ্ছে আহত ও অন্যান্য শ্রমিকরা। কবে আবার চালু হবে টাম্পাকো কারখানা সেদিনের অপেক্ষায় শ্রমিকরা। আগামী জুলাইয়ে নতুন ভবন উদ্বোধনের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানাটি ফের চালু হলে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে শিল্পনগরী বিসিকে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে টঙ্গীর বিসিক এলাকায় পৌনে চার বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত হয় টাম্পাকো ফয়েলস লি. কারখানা।  গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর বিসিক এলাকার টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেড, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শ্রমিক ও কারখানা রক্ষায় কাজ করেন। অগ্নি-দুর্ঘটনায় প্রায় অর্ধশত শ্রমিক মারা যান, আহত হন অর্ধশতাধিক শ্রমিক-পথচারী। এ ঘটনায় টাম্পাকোর পরিবার বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা চেয়ে কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শ্রমিকরা মানববন্ধন করেন এবং টাম্পাকো কারখানাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানান। দীর্ঘ ১০ মাস পর পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অগ্নিকাণ্ডে ধসে যাওয়া সেই টাম্পাকো কারখানা।

কারখানার এক শ্রমিক রোকন বলেন, মালিক আমাদের চাকরি বহাল আছে জানিয়েছেন। কারখানা আবার চালু হলে আমাদের অনেক উপকার হবে। কারখানা ম্যানেজার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ঈদের পর কারখানাটির কাজ শুরু হবে। যারা এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন তারা আবার কাজ করতে পারবেন। এমনকি যারা এই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক তাদের এখনো বেতন দেওয়া হচ্ছে।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাফিউস সামি আলমগীর বলেন, অগ্নি-দুর্ঘটনার পর আমরা এখনো শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিয়ে যাচ্ছি। অগ্নি-দুর্ঘটনা ঘটার ১৫ দিনের মধ্যে লেবার কোর্টের মাধ্যমে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ ভবন সরানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

আগামী মাসে নতুন ভবন উদ্বোধন হবে। তিনি বলেন, যে শ্রমিকরা মারা গেছেন তাদের স্ত্রী এমনকি পরিবারের যে কোনো ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুযোগ পাবেন। গাজীপুর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, কারখানা আগুনে পুরে ছাই হয়ে যাওয়ার পরও কারখানা মালিক প্রতি মাসে শ্রমিকদের বেতন দিয়ে যাচ্ছেন এবং প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের খোঁজখবর রাখছেন এটা বাংলাদেশে বিরল ঘটনা।

সর্বশেষ খবর