মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অবৈধ ট্রলির বৈধ চলাচল!

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

অবৈধ ট্রলির বৈধ চলাচল!

উচ্চমাত্রার শব্দে ট্রলি চলাচলের কারণে অতিমাত্রায় শব্দ দূষণ হয়। যে কারণে সরকার ২০১০ সালে সারা দেশে সব ধরনের ট্রলি চলাচল অবৈধ ঘোষণা করে। এ ছাড়া ট্রলি আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু এ নির্দেশ রংপুরে মানা হচ্ছে না। রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকাতেই প্রতিদিন ৩ হাজারের বেশি ট্রলি বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে অবাধে চলাচল করছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। ট্রলির বিকট আওয়াজে শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছে নগরবাসী। ট্রলি মালিক ও চালকরা জানান, পুলিশকে টোকেনের মাধ্যমে মাসোহারা দিয়ে নগরীতে ট্রলি দিয়ে মালামাল বহন করা হয়। পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা অভিযোগ করেন, অবৈধ ট্রলি বন্ধের ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো সাড়া মিলছে না। জেলা ট্রলি মালিক সমিতির দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, রংপুর সিটির বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন ছোট-বড় মিলে ৩ হাজার ২০০ ট্রলি বিভিন্ন পণ্য নিয়ে চলাচল করে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বলেন, নগরীর পুলিশ ফাঁড়ি ও ট্রাফিক বিভাগকে ট্রলি প্রতি মাসিক ৩০০ টাকা দিয়ে টোকেন নিতে হয়। যেসব ট্রলি টোকেন ছাড়াই চলাচল করে সেটাকে আটক করে পুলিশ। পরে টোকেন নিলে সেটা ছেড়ে দেয়। মডার্ন মোড় এলাকার ট্রলিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, বৈধ-অবৈধ জানি না। পুলিশকে মাসে ৩০০ টাকা দেই। পুলিশ কিছু বলে না। নিরাপদে ট্রলি চালাচ্ছি। সিটি মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বলেন, সড়কে চলাচল করার সময় ট্রলির বিকট আওয়াজে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছে নগরবাসী। ট্রলি বন্ধে পুলিশ প্রশাসনকে বলা হলেও কাজ হচ্ছে না। জেলা মটর মালিক সমিতির সভাপতি আলী আজগার আহমেদ পিন্টু বলেন, শুধু নগরীতে নয় পুরো জেলায় অবৈধ ট্রলি, নসিমন ও ভটভটি চলাচল বন্ধের জন্য একাধিকবার সভা করে পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউই কোনো উদ্যোগ নেয়নি। মাসোহারা নেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে রংপুর ট্রাফিক পরিদর্শক মিজানুর ফাহামী বলেন, সড়কে ট্রলি চলাচল অবৈধ এটা ঠিক। গত ২১ মে আমি যোগদান করেছি। দীর্ঘদিনের জঞ্জাল মোচনে কষ্ট হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে শুধু নগরীতে নয় জেলার কোনো সড়কে অবৈধ যানবাহন চলবে না। ধরে বাজেয়াপ্ত করা হবে। ট্রাফিকের কোনো সদস্য অনিয়মে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, অবৈধ ট্রলি আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব থানা, ট্রাফিট বিভাগ ও ফাঁড়ি ইনচার্জদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর