মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভূমি সেবায় আধুনিকতার ছোঁয়া

মাহবুব মমতাজী

ভূমি সেবায় আধুনিকতার ছোঁয়া

ভবনটির প্রধান ফটকের ডান দিকে রয়েছে একটি টিনশেড ঘর। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাটি ও মানুষ’। তাতেই বসে অপেক্ষা করছেন কয়েকজন। এর সামনেই পরিপাটি করে সাজানো একটি কার্যালয়। নিজ কক্ষে বসে রয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তিনি আগতদের একেক করে ডাকছেন, কথা বলছেন। দেখে মনে হবে, চিকিৎসক চেম্বারে রোগী দেখছেন, ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। এ চিত্রটি রাজধানীর মতিঝিল রাজস্ব সার্কেলের। বঙ্গভবনের দক্ষিণ পাশে জয়কালী মন্দিরের কাছে মতিঝিল রাজস্ব সার্কেলের কার্যালয়টি। ভূমি দফতরের বাইরে দালালের দৌরাত্ম্য, সেবাপ্রার্থীর প্রতি কর্মচারীদের অবহেলা ও টাকা আদায় এবং হয়রানি বন্ধে এ সেবাব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলে জানান মতিঝিল রাজস্ব সার্কেলের সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মমতাজ বেগম। তিনি বর্তমানে উত্তরায় কর্মরত। মমতাজ বেগম আরও জানান, সেবা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তার কার্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হেল্প ডেস্ক’, সিসি ক্যামেরা, স্বল্প সময়ে দাফতরিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ‘ইন্টারকম’ স্থাপন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ডিজিটাল হাজিরা চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরো কার্যালয়টি সংস্কার করা হয়েছে। আর আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের জমি-সংক্রান্ত জটিলতা দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বাসায় বসেই কাজের অগ্রগতি ও অন্যান্য তথ্যসেবা পান মানুষ। সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে একটি বোর্ডে নাগরিক সনদ টানানো আছে। তাতে জমির নামজারি করতে কত টাকা লাগে, খতিয়ান তুলতে কত লাগে, খাসজমি বন্দোবস্ত নিতে কী করণীয় সব তথ্য রয়েছে। পৃথক আরেকটি বোর্ডে কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষের ওপর কর্মচারীদের নাম, শাখার নাম, কার কাছে কোন সেবা পাওয়া যাবে তাও রয়েছে। বারান্দার হেল্প ডেস্কে একজন কর্মচারী বসে আগত ব্যক্তিদের তথ্য দিচ্ছেন ওই কমিশনারের কক্ষে ছোট সাদা বোর্ডে তার প্রতিদিনের কাজ, কোন কোন মৌজা তার সার্কেলে, বার্ষিক বকেয়া আদায়, মোট রাজস্ব আদায় ইত্যাদি লেখা রয়েছে।

প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর গলায় ঝুলানো পরিচয়পত্র। একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে মোহাম্মদপুর সার্কেল ভূমি অফিসেও। সেখানে ঢুকতেই চোখে পড়বে ‘সেবা সহজীকরণ বোর্ড’। তাতে কর্মীদের ছবি দিয়ে কার কী দায়িত্ব, তা লিখে রাখা হয়েছে। নামের পাশে কর্মীদের মোবাইল ফোন নম্বরও দেওয়া আছে। জমিজমার ঝামেলা নিয়ে যারা সেখানে যান, তারা যাতে দালালদের খপ্পরে না পড়েন, তার জন্যই এ ব্যবস্থা।

সর্বশেষ খবর