মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

লালমাই পাহাড়ে বিরল উদ্ভিদের উদ্যান

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

লালমাই পাহাড়ে বিরল উদ্ভিদের উদ্যান

প্রকল্পের নামকরণ করা হয়েছে ‘লালমাই এলাকায় উদ্ভিদ উদ্যান স্থাপন প্রকল্প’। পাহাড়ের মাথায় ইট বিছানো পথে সবুজের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে ঝরে যাবে সব ক্লান্তি। সবুজ প্রকৃতির মাঝে পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনে আর বাড়ি ফিরতে মন চাইবে না।

দেশি প্রজাতির ফুল, ফলদ ও কাঠ গাছের অধিকাংশই এখন বিলুপ্তপ্রায়। কিছু কিছু অঞ্চলে গুটিকয়েকের দেখা মিললেও একসঙ্গে এত বিরল প্রজাতির বৃক্ষের সমাহার চোখে পড়ে না। বর্তমান প্রজন্ম ভুলতে বসা বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণ করছে সামাজিক বন বিভাগ। সেই সঙ্গে নেওয়া হয়েছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ব্যবস্থাও। বিলুপ্তপ্রায় বিরল উদ্ভিদ রাধাচূড়া, নাগেশ্বর, আগার, নাগলিঙ্গম, কাঞ্চন, অশ্বত্থ, চন্দন, রক্তচন্দন, চালমুগরা, লোহাকাঠ, চাপালিশ, ধূপ, বাবলা, হরীতকী, বহেড়া, হিজল, কনক, তমাল, অশোক, সিভিট, উড়ি আম, বন পেয়ারা, অর্জুন, মহুয়া, তেলশুর, পুঁটিজাম, বাঁশপাতা, কুম্ভি, পিতরাজ, পারুল, জারুল, চম্পা, টগর, বেলি, চিকরাশি, হরিয়ান, অর্জুন, লটকন, ফেন্স, বোটলব্রাশ, বাসক, রঙ্গন, করমচা, সোনালু, বট ও কৃষ্ণচূড়ার সমাহার রয়েছে এ উদ্যানে।

কুমিল্লা নগরীর সালমানপুর এলাকায় লালমাই পাহাড়ের ওপর অনিন্দ্য সুন্দর প্রকৃতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে এ প্রকল্প। প্রকল্পের নামকরণ করা হয়েছে ‘লালমাই এলাকায় উদ্ভিদ উদ্যান স্থাপন প্রকল্প’। পাহাড়ের মাথায় ইট বিছানো পথে সবুজের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে ঝরে যাবে সব ক্লান্তি। সবুজ প্রকৃতির মাঝে পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনে আর বাড়ি ফিরতে মন চাইবে না।

কুমিল্লার সামাজিক বন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জনা যায়, ১৬.৪৫ একর জায়গার ওপর ২০১৫-১৬ সালে প্রকল্পের কাজটি হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে পার্ক অফিস, বাউন্ডারি ওয়াল, ক্যাকটাস হাউস ও অর্কিড হাউস। দর্শনার্থীদের বসার জন্য করা হয়েছে আরসিসি বেঞ্চ। নির্মাণ করা হয়েছে শৌচাগার। বিরল প্রজাতির ৭৮ প্রজাতির ১৭,৫০টি বৃক্ষ রোপণের পাশাপাশি ক্যাকটাস হাউস ও অর্কিড হাউসের জন্য আনা হয়েছে ২৬০টি করে অর্কিড ও ক্যাকটাসের চারা। এ ছাড়া পুরো উদ্যানে রয়েছে নানারকম বৃক্ষের সমাহার। কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, অনেক সময় ও শ্রম দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও উদ্যান থেকে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। কুমিল্লা নগরীর পাশের এ উদ্যান নতুন প্রজন্মকে বিরল প্রজাতির গাছ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার সুযোগ করে দেবে। আশা করছি, ২০১৮ সালের প্রথমদিকে উদ্যানটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারব।

সর্বশেষ খবর