মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

অরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

অরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা

ইতিহাস-ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লা। কুমিল্লার ময়নামতি-লালমাই পাহাড় ঘেঁষে রয়েছে ৮ম শতকের প্রত্নতাত্ত্বিক নানা নিদর্শন। নিদর্শনগুলোর অধিকাংশই অযত্ন-অবহেলায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সেগুলো রক্ষা করার দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লার সচেতনরা। তাদের দাবি, খনন করা স্থানগুলো সুরক্ষিত করা হলে কুমিল্লায় পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লাস্থ অফিসের সূত্র মতে, কুমিল্লায় খননযোগ্য ২৭টি স্থান রয়েছে। তার মধ্যে ১০টি স্থান খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে শালবন বিহারের সীমানা প্রাচীর রয়েছে। ইটাখোলা ও রূপবান মুড়ার সীমানা প্রাচীরের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমানা প্রাচীর না থাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো নেশাখোরদের আড্ডাস্থল ও গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। কিছু স্থানের ইটগুলো খুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ময়নামতি জাদুঘরের পাশে রয়েছে শালবন বিহার। তার আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কোটিলা মুড়া, চারপত্র মুড়া, রূপবান মুড়া, ইটাখোলা মুড়া, আনন্দ বিহার, রানীর বাংলো ও ভোজ রাজার বাড়ি বিহার প্রভৃতি। জাদুঘর ও বিহারগুলো এখন দেশ-বিদেশের গবেষক, পর্যটক এবং দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বছরের প্রায় প্রতিদিনই দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটক ও দর্শনার্থী ময়নামতি জাদুঘরে প্রদর্শিত প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তুসমূহ ও বিহারগুলো দেখতে আসে। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবের দিনে এ এলাকায় উপচে পড়া ভিড় থাকে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকাশনা ময়নামতি লালমাই পুস্তিকা থেকে জানা যায়, প্রাথমিক অবস্থায় শ্রীভবদেবের মহাবিহার, কোটিলা মুড়া, চারপত্র মুড়া, রূপবান মুড়া, ইটাখোলা মুড়া, আনন্দ বিহার, রানীর বাংলো, লতিকোট মুড়া, হাতিগাড়া মুড়া ও ভোজ রাজার বাড়ি বিহার প্রভৃতি স্থানে খননের ফলে অনেক মূল্যবান পুরাকীর্তি উদ্ধার করা হয়। এসব পুরাকীর্তি সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনীর জন্য ১৯৬৫ সালে শালবন বিহারের দক্ষিণ পাশে একটি জাদুঘর স্থাপন করা হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিক কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, পর্যটন শিল্পে কুমিল্লার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে নিকটবর্তী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোতে যোগাযোগের ভালো সুবিধা রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর আন্তরিক হলে এখানে দর্শনার্থীর ঢল নামবে। কুমিল্লার প্রত্নতত্ত্ব অফিসকে পর্যটনের উন্নয়নে দৃশ্যমান তেমন কোনো কাজ করতে দেখা যাচ্ছে না।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা অফিসের আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াছমিন জানান, রানী ময়নামতির প্রাসাদের সৌন্দর্যবর্ধন করে টিকিটের আওতায় আনা হবে। প্রতি বছর নতুন স্থান খননের পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।

সর্বশেষ খবর