কুমিল্লা নগরী থেকে বর্তমানে নিয়মিত অফসেট পেপারে রঙিন ৮টি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। নিয়মিত প্রকাশিত হয় এমন সাপ্তাহিক পত্রিকার সংখ্যাও ডজন ছাড়িয়ে। জেলার ১৭টি উপজেলা থেকে
একাধিক সংবাদপত্র নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। ১৮৮০ সালে প্রকাশিত হয় ত্রিপুরা তথা কুমিল্লা জেলার প্রথম সাপ্তাহিক ‘ত্রিপুরা বার্তাবহ’। ১৮৮৩ সালে বের হয় তৎকালীন ত্রিপুরার দ্বিতীয় সাপ্তাহিক ‘ত্রিপুরা হিতৈষী।’ এ পত্রিকা দুটির মধ্য দিয়ে কুমিল্লা দেশের সংবাদপত্র ইতিহাসে উজ্জ্বল স্থান অধিকার করে নিয়েছে।
একসময় ‘ত্রিপুরা হিতৈষী’র সম্পাদনার দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শ্রীমতি ঊর্মিলা সিংহ এবং এর মাধ্যমে তিনি তৎকালীন ত্রিপুরা তথা কুমিল্লা জেলার প্রথম মহিলা সম্পাদিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। ঊর্মিলা সিংহ সারা বাংলাদেশেরও প্রথম মহিলা সম্পাদিকা। ‘ত্রিপুরা হিতৈষী’র আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক ১৮৮৩ সালে বের হয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এটি ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত প্রকাশ পেয়েছিল। একটি পত্রিকার দীর্ঘ ৬৫ বছর আয়ুষ্কাল শুধু কুমিল্লার সংবাদপত্রশিল্প নয়, দেশের সংবাদপত্রশিল্পেও একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
স্বাধীনতা উত্তরকালে গত ৪৩ বছরে কুমিল্লা থেকে অনেক পত্রিকা প্রকাশ পেয়েছে, এর কতগুলো মৃত কিংবা অর্ধমৃত হলেও অনেকগুলো নিয়মিতভাবে প্রকাশনা অব্যাহত রেখেছে। ‘রূপসী বাংলা’ ছাড়াও বর্তমান প্রশাসনিক কুমিল্লা জেলা থেকে স্বাধীনতার পর প্রকাশিত যে দৈনিকগুলোর নাম উল্লেখ করা যায়, তার মধ্যে রয়েছে— বাংলাদেশ সংবাদ, কুমিল্লা বার্তা, শিরোনাম, পূর্বাশা, কুমিল্লা মুক্তকণ্ঠ, শ্রমিক, প্রান্তর, কুমিল্লার কাগজ, কুমিল্লার ডাক, ময়নামতি, আমাদের কুমিল্লা,
বাংলার আলোড়ন, কুমিল্লা কণ্ঠ, কুমিল্লার আলো, আজকের কুমিল্লা, গণমুক্তি, ডাক প্রতিদিন ও ভোরের কলাম।
বর্তমানে কুমিল্লা জেলা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিকগুলোর মধ্যে রয়েছে— আমোদ, বঙ্গবার্তা, স্বাতন্ত্র্য, রঙধনু, সমাজকণ্ঠ, ফলক, নিরীক্ষণ, অভিবাদন, নতুনপত্র, মুক্তকাগজ, পাঠকবার্তা, ক্রাইম রিপোর্টার, অপরাধসংবাদ, সীমান্ত সংবাদ, কালিকলম, মেগোতি, বরুড়াকণ্ঠ, টেলিফোন, মুক্তির লড়াই, সময়ের দর্পণ, লাকসাম বার্তা, আলোর দিশারী, লাকসাম, জয়কণ্ঠ, চৌদ্দগ্রাম সংবাদ, চৌদ্দগ্রাম বার্তা, চৌদ্দগ্রামের আলো, কুমিল্লার কথা, ভোরের সূর্যোদয়, মনোহরগঞ্জ বার্তা, বিবর্তন, গোমতি, জনতার বার্তা, সমতটের কাগজ, মুক্ত বাংলাদেশ ইত্যাদি।