মঙ্গলবার, ৭ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় ১২৯ বছরের সম্প্রীতি ক্লাব

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

১৮৮৯ সালের ২৬ মে। ১২৯ বছর আগে ওই দিন কুমিল্লায় গড়ে উঠে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্লাব। কুমিল্লা থিয়োসফিক্যাল সোসাইটি নামের ক্লাবটি ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম সম্প্রীতি ক্লাব। ক্লাবটি বিশ্বভ্রাতৃত্ব বোধ সৃষ্টিতে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থভিত্তিক আলোচনা করে। এ ছাড়া মানবকল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। ১৮৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এই ক্লাবটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ১৪ বছর পর কুমিল্লায় ক্লাবটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কুমিল্লার পরে ভারতে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়।

কুমিল্লা থিয়োসফিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য দাস টিটু বলেন, শিক্ষা সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা। এখানে অনেক গুণীজনের জন্ম হয়েছে। বিশ্বভ্রাতৃত্ব বোধ ও সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় এই জেলার মানুষ অগ্রগামী ছিলেন। তাই তারা মানবকল্যাণে ১২৯ বছর আগে এই উপমহাদেশে প্রথম সম্প্রীতির ক্লাব গড়ে তোলেন। কুমিল্লা থিয়োসফিক্যাল সোসাইটি স্থাপনের পর প্রতি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বিভিন্ন ধর্ম দর্শন নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়ে থাকে। এতে এক ধর্মের লোক অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, ধর্ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়। মানুষে মানুষে ভালোবাসা ও বিশ্বভ্রাতৃত্ব বোধ সৃষ্টি হয়।

প্রথমে সোসাইটির ঘরটি টিন দিয়ে তৈরি করা হয়। পরে ১৯১৩ সালে এটি পাকা ভবন করা হয়। ত্রিপুরার মহারাজ বীরেন্দ্র কিশোর দেব মাণিক্যসহ অন্যরা ঘর নির্মাণে সহযোগিতা করেন। এখানে পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব রাসমোহন চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন গুণী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে সোসাইটির টাউন হলের পাশের ঘরটি ভঙ্গুর অবস্থায় পড়ে আছে। এ ছাড়া একটি পক্ষ তালা মেরে রেখেছে। এটির সংস্কার এবং ব্যবহারে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন।

অচিন্ত্য দাস টিটু আরও বলেন, জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি সোসাইটি সেবামূলক কাজও করে যাচ্ছে।

সদস্যদের চাঁদা দিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ, বই বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বলেন, মানুষ অপরিমিত শক্তির অধিকারী। তাদের অন্তরে এমন মানবিক শক্তি রয়েছে যা উন্মেষ হলে মানব সমাজ উপকৃত হবে। সেই সুপ্ত শক্তি জাগ্রত করতে প্রয়োজন চর্চা। সেই চর্চার কাজটি করে থাকে সোসাইটি। মানুষে মানুষে বর্ণ বৈষম্য আর ভেদাভেদ দূর করতে হবে। তাই তো সংগঠনের বাণী হচ্ছে ‘সত্যের চেয়ে আর বড় কোনো ধর্ম নেই।’

সর্বশেষ খবর