শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

নষ্ট হচ্ছে পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নষ্ট হচ্ছে পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য

রাজশাহী নগরবাসীর বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র পদ্মার পাড়। দিন শেষে কিছুটা প্রশান্তির আশায় মানুষ ছুটে যায় নদীর পাড়ে। তবে পদ্মাপাড়ের বিনোদনের জায়গাগুলোর এখন বেহাল দশা। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হারাচ্ছে সৌন্দর্য। কোথাও গড়ে তোলা হয়েছে গরুর গোয়াল, কোথাও তুলে নেওয়া হয়েছে চলার পথের টাইলস। দীর্ঘদিন ধরে এমন হাল হলেও সৌন্দর্য রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের।

পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য এভাবে নষ্ট করে ফেলায় ক্ষুব্ধ সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, ‘বিশে^র বিভিন্ন দেশে নদীকে ঘিরে বিনোদন স্পট গড়ে তোলা হয়েছে। আমিও আগের মেয়াদে তেমন উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু এবার এসে দেখি সব নষ্ট হতে চলেছে। শিগগিরই নদীর তীর থেকে গরুর গোয়াল উচ্ছেদের উদ্যোগ নেব।’

নগরবাসীর বিনোদনের কথা মাথায় রেখে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন তার আগের মেয়াদে পদ্মাপাড়কে দৃষ্টিনন্দন করেছিলেন।  তিনি পদ্মারপাড়ে রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চ, পঞ্চবটি, পদ্মা গার্ডেন, লালন শাহ মুক্তমঞ্চ, বড়কুঠি ও টি-বাঁধের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেছিলেন। পদ্মাপাড়কে সাজিয়ে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। টাইলস বসিয়ে তৈরি করা হয় মনোরম ওয়াকওয়ে। কিন্তু মাত্র চার-পাঁচ বছরের ব্যবধানে নদীর ধারের মনোরম সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। প্রশান্তির আশায় মানুষ নদীর ধারে এলেও পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়। এরই মধ্যে অনেক জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। কিন্তু এই নদীর তীর রক্ষণাবেক্ষণ এবং দেখভালের দায়িত্ব রাজশাহী সিটি করপোরেশনের।

রাজশাহী মহানগরীর আলুপট্টি ফুদকিপাড়া। পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ এলাকায় বিকাল থেকে ঢল নামে সব ধরনের মানুষের। কিন্তু নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে গোয়ালঘর। নদী তীরের বড় একটি অংশজুড়ে পালন করা হচ্ছে গরু। নগরীর লালন শাহ পার্ক এলাকাটি তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল রাজশাহী সিটি করপোরেশন। পদ্মাপাড়ের এ পার্কটি ইজারা দেওয়া প্রক্রিয়া শুরু করেছিল রাসিক। সেই ঘেরা পার্কের ভিতরে রীতিমতো বাথান গড়ে তুলেছেন দরগাপাড়া ও পাঠানপাড়া এলাকার লোকজন। পদ্মা পাড়ের এ পার্কটির মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক গোয়ালঘর। লালন শাহ মঞ্চকে ঘিরে নির্মাণ করা চলার পথের ও বসার জায়গার টাইলস খুলে নিয়ে গেছেন স্থানীয়রা। নগরীর মুন্নুজান স্কুলের সামনের পদ্মার পাড়টির ব্যবহার করা হচ্ছে গরু রাখার স্থান হিসেবে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে গরু বেঁধে রাখা হচ্ছে। গোবরের গন্ধে ওই এলাকা দিয়ে হাঁটা দায় হয়ে পড়েছে। এমন হাল নগরীর পদ্মাপাড়ের প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। ফুদকিপাড়া এলাকার কামার উল্লাহ জানান, পদ্মাপাড়ের এ এলাকাটিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকা- চলে। এখন গোয়ালঘর নির্মাণ হওয়ায় সেখানে দর্শকরা যেতে পারছেন না।

নওহাটা মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, যখন থেকে পদ্মাপাড়কে মানুষের বিনোদনের উপযোগী করে তোলা হয়েছে, তখন থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালীরা জায়গাটি দখল করে টিনশেডের ঘর তুলে দখল করেছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, তারা বিষয়টি দেখেছেন। পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে শিগগিরই তারা উচ্ছেদ অভিযান চালাবেন।

সর্বশেষ খবর