রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার মুড়িপট্টির জায়গায় বহুতল মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় সিটি করপোরেশন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১২ সালের মার্চে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। তার আগে সেখানে ব্যবসা করতে থাকা ব্যবসায়ীদের লোকনাথ স্কুলের সামনে রাস্তায় অস্থায়ী দোকানঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। কথা ছিল এক বছরের মধ্যে তাদের জন্য স্থায়ী দোকানঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে। কিন্তু ৭ বছরেও অস্থায়ী দোকানঘর থেকে স্থায়ী ঘরে উঠতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।
যে জায়গায় বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে, তার মালিকানা জেলা প্রশাসকের। সরকারি খাস সম্পত্তিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্মাণ করছে ওই মার্কেট। এক বছরের মধ্যে বহুতল মার্কেটটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন ১০ তলা পর্যন্ত ভবনটি উঠেছে। কিন্তু বরাদ্দ দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। আর জমির মালিকানা জটিলতায় ভবনের দোকানঘর বরাদ্দ করতে পারছে না সিটি করপোরেশন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বারবার সময় বাড়িয়ে নিয়েও কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে লোকনাথ স্কুলের সামনে থাকা ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে মার্কেটের নিচে আবারও ফিরে এসেছেন। তবে রাস্তা থেকে সরেনি সেই অস্থায়ী মার্কেটটি। রাজশাহী মুড়িপট্টি মার্কেটের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও সিটি করপোরেশন তাদের দোকানঘর বরাদ্দ দিতে পারছে না। কয়েক দফায় তারা মেয়রের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মেয়র আশ্বস্ত করলেও তারা দোকান পাচ্ছেন না। জমিটি সরকারি জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রথমে সিটি করপোরেশন জোর করে এখানে মার্কেট করতে চেয়েছিল। আমরা আদালতে মামলা করেছিলাম। মামলার কারণে তখন মার্কেট নির্মাণ করতে পারেনি। কারণ জমিটির মালিকানা জেলা প্রশাসকের। পরে আমাদের দোকানঘর দেওয়ার আশ্বাস দিলে আমরা জমিটি ছেড়ে দিই।’ জেলা প্রশাসকের ভূমি শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই জমিটি সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত। সেখানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সিটি করপোরেশন জমিটি বরাদ্দ নিতে বা সেখানে স্থাপনা নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসকের দফতরে কোনো আবেদন করেনি। জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতার কারণেই সিটি করপোরেশন এখন সেখানে কোনো দোকান বরাদ্দ দিতে পারছে না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, জমির মালিকানা নিয়ে কোনো জটিলতা নেই। ঠিকাদার এখনো নির্মাণকাজ শেষ করতে না পারায় মেয়র ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শিগগিরই ব্যবসায়ীদের সেখানে দোকানঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।