মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

মোহনীয় রূপে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যান

হমহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

মোহনীয় রূপে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যান

বিরল প্রজাতির উদ্ভিদের সমাহার এখানে। চারদিকে সবুজের মোহনীয় রূপ। পাখির কিচিরমিচির শব্দ। ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয় মুহূর্তে। বর্ষায় উদ্ভিদের যৌবন যেন উপচে পড়ছে। লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানে দেখা যাবে প্রকৃতির এই ¯িœগ্ধ রূপ। কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ি সালমানপুরে এটি অবস্থিত। ক্ষুদ্র পরিসরে উদ্যানটি নির্মিত হওয়ায় গবেষণা ও বিনোদনের খুব একটা কাজে আসছে না। এতে ব্যাহত হচ্ছে নির্মাণের উদ্দেশ্য। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমী ও শিক্ষার্থীদের দাবি উদ্ভিদ উদ্যানটির আয়তন বাড়ানোর।

সূত্র মতে, ঢাকার মিরপুর ও চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের পর কুমিল্লার লালমাই উদ্ভিদ উদ্যান দেশের তৃতীয় বিরল উদ্ভিদ উদ্যান। ২০১৫ সালে কাজ শুরু হয়ে চলতি বছর এটির কাজ শেষ হয়। ১৭ একর আয়তনের লালমাই উদ্ভিদ উদ্যান নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। কাজ শেষে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল তৈরি, শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি, বিনোদনের ব্যবস্থা ও স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। তবে আয়তন কম হওয়ায় এগুলোর বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। বর্তমান উদ্যানের নিকটবর্তী বনবিভাগের ৩০ একরের মতো প্রাকৃতিক শালবাগান রয়েছে। মাঝে আরও ৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানটি পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করবে।

লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফেজ আহমেদ জানান, এখানে ক্যাকটাস হাউস, অর্কিড হাউস, ফুলের বাগান, বিরল উদ্ভিদ বাগান, বন্যপ্রাণীর জন্য জলাশয়, বিভিন্ন প্রজাতির ঘাসের চাষ করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের বসার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে আরসিসি বেঞ্চ ও ব্যাঙের ছাতা সদৃশ বিশ্রাম স্পট।

পাশের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী জয়নাল আবেদিন রনি বলেন, লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানে পাহাড়ের মাথায় ইট বিছানো পথে সবুজের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে ঝরে যায় সব ক্লান্তি। পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনে আর বাড়ি ফিরতে মন চায় না। এখানে বিরল অনেক উদ্ভিদ রয়েছে। তা অনেকে শৈশবে দেখেছেন। তারা এগুলো দেখে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়বেন। উদ্যানটি সুন্দর পরিবেশে নির্মিত হলেও আয়তনে খুবই ছোট। এটির আয়তন আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, কুমিল্লা নগরীর এ উদ্যান নতুন প্রজন্মকে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার সুযোগ করে দেবে। স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আয়তন বাড়ানোর জন্য আমরা অধিদফতরে আবেদন জানিয়েছি। সেখানে ময়নামতি জাদুঘরের মতো ফরেস্ট মিউজিয়াম করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আছে ১৭ একর। এটির নিকটবর্তী আছে বন বিভাগের তিন খন্ডে ৩০ একর ভূমি। মাঝে সংযোগ ৩০ একরের মতো ভূমি অধিগ্রহণ হলে প্রায়  ৮০ একরের মতো হবে। এতে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এদিকে আমাদের জনবলেরও অনেক সংকট রয়েছে। বর্তমান উদ্যানটি অন্যত্র থেকে এনে তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে চালাচ্ছি। এখানে রেঞ্জ অফিসার, বিট অফিসার, বোটানিস্ট, কিউরেটরসহ ২৫ জন লোকবল প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর