শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দখল ভরাট বর্জ্যে বেহাল ৩৬ খাল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

দখল ভরাট বর্জ্যে বেহাল ৩৬ খাল

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ার্ডের ডোম খাল। এ খালের অধিকাংশ স্থানই নানা বর্জ্যে ভরপুর। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি একটি খাল। পক্ষান্তরে, নগরের পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের ওমর আলী মাতব্বর রোডের বির্জাখালের চিত্রও অভিন্ন। এখানকার অনেক অংশই বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

এভাবে নগরের ছোট বড় ৩৬ খালের মধ্যে সবটির অবস্থা বেহাল। বেদখল, ভরাট ও বর্জ্যে ভরপুর প্রায় প্রতিটি খাল। সঙ্গে নগরের নালা-নর্দমা ও ড্রেনগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। নানা বর্জ্যে ঠাসা এমন খাল-নালার অরক্ষিত স্থানে গত পাঁচ মাসে পঁাঁচজন মানুষের মৃত্যু-নিখোঁজ হয়।  তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) গত সাড়ে তিন বছর পর নগরে চলমান মেগা প্রকল্পের বাইরে ২৯৮টি খাল-নালার তালিকা করে নিজস্ব শ্রমিক ও খনন যন্ত্র দিয়ে আবর্জনা এবং মাটি অপসারণের উদ্যোগ নেয়। গত শনিবার থেকে পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু করে। এরই মধ্যে নগরের চান্দগাঁও এলাকার ডোম খাল এবং ওমর আলী মাতব্বর রোডের বির্জাখাল থেকে মাটি ও আবর্জনা অপসারণ করা হয়। 

চসিকের উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, নতুন করে ৪১ ওয়ার্ড থেকে চলমান মেগা প্রকল্পের বাইরে ২৯৮টি খাল-নালার তালিকা করা হয়েছে। এসব খাল খনন ও নালা থেকে আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। নিজস্ব শ্রমিক ও খনন যন্ত্র দিয়ে আবর্জনা ও মাটি অপসারণ করা হচ্ছে। অপসারণ কাজে ব্যবহার হচ্ছে দুটি স্কেভেটর ও চারটি ড্রাম ট্রাক। জানা যায়, চসিক বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে প্রতি বছরই শুস্ক মৌসুমে নগরের খাল খনন ও নালাগুলো পরিষ্কার করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে নগরে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প চলমান থাকায় গত প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে খাল খনন ও নালা পরিষ্কার বন্ধ রাখে। চসিক সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে খাল-নালা খনন করেছিল। তবে গত বছর চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন কয়েকটি খালে পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। এবার চসিক চলমান মেগা প্রকল্পের বাইরে ২৯৮টি খাল-নালার তালিকা করে। এসব খাল নালা থেকে নিজস্ব শ্রমিক ও খনন যন্ত্র দিয়ে আবর্জনা ও মাটি অপসারণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রণীত ড্রেনেজ মাস্টারপ্লানে নগরে খাল আছে ১৬৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ৫৭টি। কিন্তু সিডিএ প্রণীত মেগা প্রকল্পে খাল আছে ৩৬টি। ২১টি খাল ভরাট হয়ে গেলেও খনন করা হচ্ছে না দীর্ঘদিন। নগরে ড্রেন আছে ৯৭২ কিলোমিটার। জলাবদ্ধতা নিরসনে নিয়মিত খালগুলো খনন এবং ড্রেনগুলো থেকে চসিক আবর্জনা অপসারণ করার কথা। কিন্তু মেগা প্রকল্পের অজুহাতে অতিগুরুত্বপূর্ণ এ দুটি কাজ করা হচ্ছে না। ফলে গত দুটি বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে অল্প বৃষ্টিতেই চরম আকারের জলাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।

সর্বশেষ খবর