মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মহাপরিকল্পনা আছে জায়গা নেই

সুশাসন বিশ্লেষক সুব্রত পাল বলেন, ‘পরিবেশ বাঁচিয়ে উন্নয়ন করতে হবে। রাজশাহী ছিল সম্ভাবনাময়। এখন অপরিকল্পিত ভবন হচ্ছে, এটি আত্মঘাতী’

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

মহাপরিকল্পনা আছে জায়গা নেই

রাজশাহীকে পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে ২০০৪ সালে আরডিএ ২০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা নেয়। সেটি বাস্তবায়নের সময় প্রায় শেষ। কিন্তু মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীতে যে পরিমাণ খোলা জায়গা রাখার কথা ছিল, তা রাখা হয়নি। শহরের মাত্র একটি ওয়ার্ডে খোলা জায়গা রাখার উদ্যোগ চোখে পড়েছে।

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) ওই মহাপরিকল্পনার নাম ‘মাস্টারপ্ল্যান ২০০৪-২০২৪’। এতে ৩০টি ওয়ার্ডের আয়তন হিসাব করলে দাঁড়ায় ৪৮ বর্গকিলোমিটার। এর ৫ থেকে ৭ শতাংশ জায়গা খোলা রাখার কথা। সে হিসেবে ২ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার জায়গা উন্মুক্ত রাখার কথা। কিন্তু আবাসিক এলাকার মধ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শুধু ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ রাসেল পার্ক নামে একটি উন্মুক্ত জায়গা হয়েছে, যার আয়তন আধা বর্গকিলোমিটারের কম। প্রতিটি ওয়ার্ডে যেভাবে আবাসন বাড়ছে, সেখানে উন্মুক্ত জায়গা রাখার উদ্যোগ নেই।

আরডিএ সূত্র জানায়, নগরীতে পরিকল্পিতভাবে যে ৭ আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে, সেখানেও জায়গা ছাড়া হয়নি। জলাশয় ভরাটের বিরূপ প্রভাব থেকে নগরীর পরিবেশ রক্ষায় সিটি করপোরেশন আরেকটি পরিকল্পনা করেছে। এর আওতায় নগরীর ২২টি পুকুর সংরক্ষণের তালিকা করা হয়েছে। প্রকল্পটি এখনো প্রক্রিয়াধীন। সেই পুকুরও এখন ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

সুশাসন বিশ্লেষক সুব্রত পাল বলেন, ‘পরিবেশ বাঁচিয়ে উন্নয়ন করতে হবে। রাজশাহী ছিল সম্ভাবনাময়। এখন অপরিকল্পিত ভবন হচ্ছে, এটি আত্মঘাতী।’

আরডিএর অথরাইজ অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোনো শহরের উন্মুক্ত জায়গা কতটুকু রাখা উচিত, নির্ভর করে শহরের জনসংখ্যার ঘনত্বের ওপর। উন্মুক্ত জায়গার মধ্যে সড়ক, সংরক্ষিত এলাকা ও জলাশয় আছে। রাজশাহীতে সড়ক ৭ থেকে ৮ ভাগের বেশি হবে না। উন্মুক্ত জায়গা দুই থেকে তিন ভাগের মতো। জলাশয় চার থেকে পাঁচ ভাগ। একেক শহরের আদর্শ একেক রকম হয়। যেমন শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে একরে ৮৪ জন মানুষ বাস করে। আবার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বাস করে চারজন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, শেখ রাসেল পার্ক ছাড়াও তারা আরও চারটি খেলার মাঠ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।  ইতোমধ্যে নগরীর কোর্ট এলাকায় একটি, বুধপাড়ায় একটি। এভাবে নগরীর চারদিকে চারটি খেলার মাঠ ও বিনোদনকেন্দ্র করার পরিকল্পনা আছে। জায়গা খুঁজে বের করতে কাজ চলছে।

সর্বশেষ খবর