রবিবার বিকাল ৪টা, আবদুল্লাহপুর টঙ্গী বেইলি ব্রিজে দাঁড়িয়ে পশ্চিম দিকে তাকাতেই চোখ পড়ল বেদেদের একটি উপগোষ্ঠী সান্দার নারী নূর-নাহার সেলাই মেশিনে জামা সেলাই করছেন। জীবন-যৌবন সব কিছুই এক নৌকায় কাটিয়ে দিলেন নূর-নাহার। অর্থের অভাবে তিন ছেলে ও স্বামী নিয়ে নদে ভাসা নৌকায় জীবন কাটাচ্ছেন।
বেদেদের একটি গোত্র হচ্ছে সান্দার। আবদুল্লাপুর ব্রিজের নিচে প্রায় শতাধিক সান্দার পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত পরিবার তুরাগ নদে নৌকায় বসবাস করছে। সান্দার নারীরা ধামা ও ঝাঁকায় করে গ্রামে গ্রামে ও মেলায় চুড়ি বিক্রি করেন। সামাজিক ও নাগরিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত। বেদে সমাজ ভবঘুরে যাযাবর জীবনের শিকলে আবদ্ধ হয়ে ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের সব নদীতে ছুটে বেড়ায় ওরা। নদী, খালের কিনার ঘেঁষে চোখে পড়ে বেদেনিদের নৌকার বহর। ঠিকানাবিহীন, অপরিচিত, অজানা, অচেনা ও সম্পূর্ণ অপরিচিত ঘাটে এসে নৌকা ভেড়ায়। আবার একদিন সেখান থেকেও উধাও। এভাবেই কাটছে ওদের জীবন। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুতেই ছেলেমেয়ে, স্ত্রী, পরিজন নিয়ে নানা প্রতিকূলতার মোকাবিলা করে বেঁচে থাকে এরা। অবহেলিত এ বেদে সম্প্রদায় সভ্য মানুষের চোখের সামনে অবলীলায় জীবন কাটালেও তাদের জীবন নিয়ে ভাবে না কেউ। কথা হয়, সান্দার পরিবারের এক বৃদ্ধ নারী শুক্করি (৭০) বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমগো বাবা, দাদা এই নদীর ওপর নৌকায় থাইকা জীবনযাপন করেছে। আমরাও এভাবেই আছি।