মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফুটপাত নেই নিকুঞ্জ থেকে উত্তরায়

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুজ উদ্দিন খান বলেন, বিআরটি প্রকল্পের কারণে সড়ক প্রশস্ত করতে গিয়ে মহাসড়কের সঙ্গে সার্ভিস লেন মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার বড় করে ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।

হাসান ইমন

ফুটপাত নেই নিকুঞ্জ থেকে উত্তরায়

রাজধানীর নিকুঞ্জ-উত্তরায় চলছে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটির কাজ। ফুটপাতজুড়ে রাখা আছে নির্মাণসামগ্রী -জয়ীতা রায়

রাজধানীর উত্তরা অংশে মহাসড়কের পাশে কিছুদিন আগেও ছিল সার্ভিস লেন। এই দুই সড়কের মধ্যখানে পথচারীদের চলাচলের জন্য ছিল ফুটপাত। বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটি প্রকল্পের কারণে ফুটপাত ভেঙে সার্ভিস লেন মহাসড়কের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু এই অংশই নয়, এয়ারপোর্ট থেকে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশের অধিকাংশ স্থানে ফুটপাত নেই। কিছু অংশে ভাঙাচোরা ও উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণসামগ্রীর দখলে রয়েছে। ফলে ফুটপাত না থাকায় পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এতে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা। 

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর নিকুঞ্জ থেকে উত্তরা যেতে এয়ারপোর্টের শুরু থেকে কোথাও নিরবচ্ছিন্ন ফুটপাত নেই। এয়ারপোর্টের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের কারণে টিনশেড দিয়ে ব্যারিকেড করে রাখা হয়েছে। এই অংশে ফুটপাত না থাকায় মানুষ মূল সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায়। একই সঙ্গে এয়ারপোর্টের ফুটওভারব্রিজ থেকে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত এই অংশের কিছু অংশে ফুটপাত থাকলেও বিভিন্ন দোকানের দখলে রয়েছে। আর বাকি অংশে ভাঙাচোরা থাকার কারণে মানুষ চলাচল করতে পারে না। উত্তরা ১ নম্বর সেক্টর থেকে জসিম উদ্দিন মোড়, আগে মহাসড়কের পাশে ফুটপাত পরে সার্ভিস লেন ছিল। কিন্তু বিআরটি প্রকল্পের কারণে ফুটপাত ভেঙে সার্ভিস লেনকে মূল সড়কের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সড়কের পাশে সরু করে ফুটপাত রয়েছে। তবে এইটুকু ফুটপাত থাকলেও ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের কারণে বিভিন্ন সরঞ্জাম রেখে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। একই অবস্থা জসীমউদদীন থেকে আজমপুর-হাউস বিল্ডিং হয়ে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত। তবে এই অংশে সরু ফুটপাত থাকলেও অধিকাংশই ভাঙাচোরা। একই সঙ্গে সড়কের বিভাজন নির্মাণের স্ল্যাবগুলো ফুটপাতে রাখা হয়েছে।

এদিকে উত্তরা থেকে এয়ারপোর্টে যেতে শায়েস্তা খাঁ এভিনিউ পর্যন্ত অনেকাংশ ফুটপাত রয়েছে। এরপর শায়েস্তা খাঁ এভিনিউ থেকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন পর্যন্ত, এই অংশে ফুটপাত নেই। এই ফুটপাতের জায়গায় রয়েছে খোলা ড্রেন। রেলস্টেশন থেকে দক্ষিণখান এভিনিউ পর্যন্ত অংশে ফুটপাত নেই। মানুষ মূল সড়ক দিয়েই চলাচল করে। একই সঙ্গে দক্ষিণখান এভিনিউ থেকে নির্মাণাধীন বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনাল বরাবর বিপরীত পাশ পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী  রেখে ফুটপাত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফুটপাত বন্ধ থাকার কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা। এ ছাড়া আগে মূল সড়কের পাশে বড় ফুটপাত ছিল। এই ফুটপাতের পাশে ছিল সার্ভিস লেন। কিন্তু বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় ফুটপাত ভেঙে রাস্তা প্রশস্ত করা হয়। ফুটপাত ভেঙে ফেলায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পথচারীরা। উত্তরায় কথা হয় পথচারী বিশ্বজিতের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখান দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। কারণ, আগে বড় ফুটপাত ছিল, এখন ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে চলছি আমরা। কিছুদিন আগে আমার চোখের সামনে এক ভাই রাস্তা দিয়ে চলার সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

নাসরিন আক্তার নামের অপর এক পথচারী বলেন, শহরের যানজট বেড়েছে। এ অবস্থায় পথচারীদের জন্য ফুটপাতগুলো সুরক্ষিত করা উচিত। আমাদের ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ফুটপাত ধরে চলাচল করে। কিন্তু এই মহাসড়কের পাশে ফুটপাত না থাকায় আমার মতো অনেক অভিভাবক আতঙ্কে থাকেন।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুজ উদ্দিন খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিআরটি প্রকল্পের কারণে সড়ক প্রশস্ত করতে গিয়ে মহাসড়কের সঙ্গে সার্ভিস লেন মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কারণে ফুটপাত ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে নতুন করে বিআরটি প্রকল্পের অধীনে সড়কের পাশে বড় করে ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। যেন পথচারীরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারে।

সর্বশেষ খবর