মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

নির্মল নগরীতে শব্দদূষণ

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নির্মল নগরীতে শব্দদূষণ

পরিচ্ছন্ন ও নির্মল বাতাসের নগরী হিসেবে পরিচিত রাজশাহী। কিন্তু মানুষ এখন ভুগছে শব্দদূষণে। চিকিৎসকরা বলছেন, নগরীর ১১ শতাংশ মানুষ এখন কানের সমস্যায় ভুগছেন। সকাল থেকেই মধ্যরাত পর্যন্ত যানবাহনের তীব্র হর্নের শব্দে অতিষ্ঠ নগরবাসী। এনিয়ে সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে রাজশাহী শহরের দুটি এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এলাকা দুটি হলো, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় এবং আদালতপাড়া। এলাকা দুটিতে গাড়ির হর্ন বাজানো নিষেধ। তবে ঠিকই হর্ন বাজছে নীরব এলাকায়। নীরব এলাকায় হর্ন বাজালে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের। অথচ রাজশাহী মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে এ ব্যাপারে কোনো মামলা হয়নি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলাকায় একটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। এতে লেখা আছে, আদালত এলাকা হর্ন বাজানো নিষেধ। আর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প এর আওতায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন এবং পরিবেশ অধিদফতর যৌথভাবে রামেক হাসপাতালের আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করে।

পরিবেশ অধিদফতর এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় রাজশাহী শহরে জরিপ চালিয়ে দেখেছে, নীরব এলাকায় মাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি শব্দ। রাজশাহী শহরের ১৫টি স্থানের বর্তমান পরিস্থিতি জানা গেছে। স্থানগুলোর প্রতিটিতেই শব্দের মাত্রা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ নির্দেশিত মান মাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ। নীরব এলাকায় শব্দের মানমাত্রা দিনে ৫০ এবং রাতে ৪০ ডেসিবল। পরিবেশ অধিদফতরের জরিপে দেখা গেছে, দুটি নীরব এলাকার মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলাকায় শব্দদূষণের সর্বোচ্চ মাত্রা ১১৯ দশমিক ৪ ডেসিবল। আর সর্বনিম্ন ৫৪ দশমিক ৭ ডেসিবল। দিনে, সন্ধ্যায় ও রাতে এ এলাকায় শব্দের গড় মাত্রা ১২৫ দশমিক ৫ ডেসিবল, যা দ্বিগুণেরও বেশি।

রামেক হাসপাতাল এলাকায় গড়ে ১০০ দশমিক ৫ ডেসিবল মাত্রার শব্দ থাকে। ওই জরিপে প্রতিটি স্থানে ১৫ জন করে ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এতে অর্ধেক উত্তরদাতা শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ সম্পর্কে জানেন না বলে জানিয়েছেন। আর ৯৫ শতাংশ উত্তরদাতা কখনো শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগ করতে দেখেননি বলে জানিয়েছেন। উত্তরদাতাদের মধ্য থেকে গত ছয় মাসে প্রায় ১১ শতাংশই কানের সমস্যার কারণে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছেন।

নীরব এলাকায় হর্ন বাজানো প্রসঙ্গে আরএমপিও উপকমিশনার (ট্রাফিক) অনির্বাণ চাকমা বলেন, নীরব এলাকায় হর্ন বাজালে ট্রাফিক আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে এমন কোনো মামলা হয়নি। অন্যান্য ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে নিয়মিতই মামলা করা হচ্ছে। জরিমানা আদায় হচ্ছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরিফ উদ্দিন বলেন, এনিয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি ও শব্দদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর