মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি!

আফজাল, টঙ্গী

রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি!

গাজীপুরের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ও গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের টানাহ্যাঁচড়া কমছে না। এতে হাসপাতালে আসা রোগীরা বিভিন্নভাবে হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নীরবতায় রোগীরা এমন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের সামনে এবং ভেতরের বিভিন্ন চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের ভিড় লেগেই থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে তারা ভিজিট করে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। দেখা গেছে, যখন রোগী টিকিট কেটে চিকিৎসাসেবার জন্য চিকিৎসকের কক্ষে যান তখন একাধিক প্রতিনিধি ওই কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে ভিড় করেন। চিকিৎসকের রুম থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর পথরোধ করে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া করেন। চিকিৎসকরা প্রতিনিধিদের কোম্পানির ওষুধ লিখলেন কি না তা মোবাইলে ছবি তুলে নেন। আবার কেউ কেউ রোগীকে অপেক্ষায় রেখে তাদের ভিজিট সেরে নিচ্ছেন। প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে এসব প্রতিনিধিদের নানান দৃশ্য। হাসপাতালের পক্ষ থেকে সপ্তাহে দুই দিন রবিবার ও বুধবার দুপুরের পর ডাক্তার ভিজিট করার কথা রয়েছে এবং কোনো রোগীকে বিরক্ত করা যাবে না- এমন শর্তও রয়েছে। অথচ এর কোনো কিছুই মানছেন না তারা। প্রতিদিন চিকিৎসক হাসপাতালে ঢোকার আগেই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা হাজির হন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। প্রায়ই দেখা গেছে, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ওই জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকেন। আবার ভেতরে প্রবেশ করলেও দেখা যায় সেখানে চলছে ভিজিট। এভাবেই প্রতিদিন সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লেখার জন্য প্রতি মাসেই টিভি-ফ্রিজসহ মোটা অঙ্কের উপহার দিতে হয় ডাক্তারদের। তার বিনিময়ে প্রতিটি প্রেসক্রিপশনেই আমাদের ওষুধ লিখতে হবে। এ ছাড়াও এসব ব্যবস্থাপত্রের একটি কপি মেইল করে হেড অফিসেও পাঠাতে হচ্ছে।  টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এসব প্রতিনিধির হাসপাতালে ঢোকাই নিষেধ রয়েছে এবং কোনো রোগীকে বিব্রত করা যাবে না। সপ্তাহে দুই দিন দুপুরের পরে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। ওষুধ কোম্পানির লোকজন কোনো কথাই শুনছেন না। একই চিত্র সারা দেশে। আমরা মাঝেমধ্যে বের করে দেই। কিছুদিন পর আবার শুরু করে। এ বিষয়ে সরকারিভাবে ব্যবস্থা নিলে হয়তো এর সমাধান মিলবে।

সর্বশেষ খবর