মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
দুই বছর পরও উন্মুক্ত নালা

নালায় পড়ে দুই বছরে আটজনের মৃত্যু

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

নালায় পড়ে দুই বছরে আটজনের মৃত্যু

চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর মোড়ের উন্মুক্ত নালায় পড়ে ব্যবসায়ী সালেহ আহমদ নিখোঁজ হন। ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট নিখোঁজ হওয়া সেই ব্যবসায়ীর খোঁজ মেলেনি গত দুই বছরেও। কিন্তু উন্মুক্ত সেই নালা রয়ে গেছে এখনো আগের মতোই। দুই বছর পার হলেও উন্মুক্ত নালা উন্মুক্তই থেকে গেল। গত দুই বছরে নালায় পড়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।    

নগরের নালা-নর্দমা ও ড্রেনগুলো পরিণত হয়েছে মৃত্যফাঁদে। গৃহস্থালি-বাণিজ্যিক বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হওয়া নালা-নর্দমাগুলোতে পড়ে মানুষ মৃত ও নিখোঁজ হচ্ছে। এখন আতঙ্কের নাম নালা-নর্দমা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীন বড় নালা আছে ১৫১টি এবং ছোট নালা আছে ১ হাজার ৫০০টি। ছোট ড্রেন আছে ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার এবং ৩ ফুট প্রস্থের বড় ড্রেন আছে ৬৫১ কিলোমিটার। চসিক নিয়মিত এসব নালা-নর্দমা পরিষ্কার করার কথা।   

চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, বড় নালাগুলো মেগা প্রকল্পের অধীন সংস্কার করা হচ্ছে। ছোটগুলো বর্ষার আগে চসিকের উদ্যোগে প্রায় ১ কোটি ৪৫ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়। নালা-নর্দমা সংস্কার কাজ চসিকের রুটিন ওয়ার্ক। পর্যায়ক্রমে এগুলো পরিষ্কার করা হবে।  

২০২১ সালে নগরের যে নালায় পড়ে ব্যবসায়ী নিখোঁজ হন, সে নালাটি এখনো উন্মুক্ত। নালার পাশ দিয়েই পথচারী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। জলাবদ্ধতা হলে নালা-সড়ক একাকার হয়ে যায়। কেবল এখানে নয়, নগরের অনেক নালা-নর্দমায় নেই নিরাপত্তা বেষ্টনী। এর মধ্যে মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বড় উন্মুক্ত নালা, বহদ্দারহাট থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কের পাশে, আগ্রাবাদ, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেটসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কের পাশে নিরাপত্তা দেয়াল ছাড়াই নালা-নর্দমা আছে। গত ২৭ আগস্ট নগরের হালিশহর রঙ্গীপাড়ার কে এম হাশিম টাওয়ার এলাকায় নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় ইয়াছিন আরাফাত নামের দেড় বছরের শিশু। পরদিন সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ৯ এপ্রিল নগরের সদরঘাট নালাপাড়া এলাকায় নালায় পড়ে তিন বছরের শিশু ওজাইফা মারা যায়। গত ৯ আগস্ট হাটহাজারী কলেজের শিক্ষার্থী নীপা পালিত মারা যান নালায় পড়ে। ২০২১ সালের ৩০ জুন ষোলশহর চশমা হিল এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা খালে পড়ে নিখোঁজ হয় তিনজন। পরে চালকসহ দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নগরের আগ্রাবাদ শেখ মুজিব সড়কে নালায় পা পিছলে পড়ে নিখোঁজ হন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া। পরদিন তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ৭ ডিসেম্বর নগরের ষোলশহর চশমা খালে পড়ে নিখোঁজের তিন দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয় কামাল উদ্দিন নামে এক শিশুর। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই আগ্রাবাদ  সিঅ্যান্ডবি কলোনির পাশে বিল্লাপাড়া এলাকায় জলাবদ্ধতার সময় নালায় পড়ে অটোরিকশাচালক ও যাত্রীর মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালের ২ জুলাই রাতে নগরের এম এম আলী রোডের নালায় পড়ে মারা যান সরকারি কর্মকর্তা শীলাব্রত বড়ুয়া।

সর্বশেষ খবর