মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নজরদারি নেই আরডিএর

ভুক্তভোগী নগরবাসীর অভিযোগ, পাঁচ তলার অনুমোদন নিয়ে সাত তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সাত তলার অনুমোদন নিয়ে ১০ তলা ভবনও বানানো হচ্ছে

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নজরদারি নেই আরডিএর

রাজশাহীতে নিয়ম না মেনেই গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। দেখার দায়িত্ব যে সংস্থার, সেই রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নেই নজরদারি। ফলে নগরীর ৯০ ভাগ ভবন পুরোপুরি বিধি না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে। নগরীর উপশহর হাউজিং এস্টেটের ১ নম্বর সেক্টর ঘুরে দেখা যায়, পুরনো বাড়িগুলো একটি নির্দিষ্ট নিয়মে নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, বিগত ১০-১৫ বছর ধরে উপশহর হাউজিং এস্টেটের ১ নম্বর সেক্টরের বাড়িগুলোর মাঝে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে নির্মিত হয়ে আসছে। প্রত্যেক বাড়ির মালিক দেড় ফুট করে জায়গা ছেড়ে বাড়ি নির্মাণ করে আসছেন। ফলে এই নিয়ম মেনেই এখানকার বাড়িগুলো তৈরি হয়েছে। আরডিএর নীরবতাই এটাকে এক ধরনের বৈধতা দিয়েছে। কেউ নতুনভাবে ভবন নির্মাণ করতে চাইলে বাড়ির পেছনে ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি ও বাড়ির উভয় পাশে ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি করে জায়গা ছাড়তে হবে। অর্থাৎ দুটি বাড়ির মাঝে দূরত্ব থাকবে ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং ভবনের সম্মুখভাগে ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি জায়গা ছাড়া থাকতে হবে। কিন্তু বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে এগুলোর কোনোটাই মানা হচ্ছে না।

আরডিএর অথরাইজড অফিসার আবুল কালাম আজাদ জানান, আরডিএ কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। যারা নিয়ম মানছে না, তাদের নোটিস করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। বিল্ডিং কোড লঙ্ঘনে আরডিএ দফতরে প্রায় প্রতিদিন অভিযোগ জমা পড়ছে। নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণের কারণে আশপাশের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় একটার পর একটা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। ফলে নগরীতে নকশাবহির্ভূত বহুতল ভবনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

ভুক্তভোগী নগরবাসীর অভিযোগ, পাঁচ তলার অনুমোদন নিয়ে সাত তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সাততলার অনুমোদন নিয়ে ১০ তলা ভবনও বানানো হচ্ছে। ইমারত বিধিমালা উপেক্ষা করে সড়ক ঘেঁষে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবনের উচ্চতা অনুযায়ী রাস্তা ও ফাঁকা জায়গা ছাড়ার নির্দিষ্ট বিধি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে আরডিএর সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোনো তদারকি নেই।

নতুন করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বহুতল ভবন গড়ে উঠছে। সেখানেও নিয়ম মানা হচ্ছে না। ইমারত বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আরডিএ ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে প্রতিদিন একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়ছে। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে- রাস্তার জন্য জায়গা না ছেড়ে ভবন নির্মাণ করা। ১০ ফুট সড়কের পাশে চার তলার জায়গায় সাত থেকে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগ আছে খোদ আরডিএর সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে। তালাইমারীতে পুকুর ভরাট করে বাসভবন নির্মাণ করেছেন আরডিএর সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমান। প্রথমে তিনি তিন তলা ভবন নির্মাণ করেন। পরে আরডিএর চেয়ারম্যান হলে আইন লঙ্ঘন করে তিনি ছয় তলার নকশা অনুমোদন করে নেন।

সর্বশেষ খবর