মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি

সকাল থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরছে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি চলছেই। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, ওইদিন রাজশাহীতে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর এই পরিমাণ বৃষ্টিতেই ভাসছে রাজশাহী শহর। বিশেষ করে শহরের মধ্যাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে হাঁটুপানি জমে গেছে। চারদিকে বৃষ্টির পানি কেবল থইথই করছে। রাজশাহীতে এখন বৃষ্টি হলেই জমে হাঁটুপানি।

রাজশাহী শহরের সড়ক ঘেঁষে থাকা ড্রেনের পয়ঃনিষ্কাশনের নোংরা পানি আর বৃষ্টি পানিতে একাকার হয়ে যায় পুরো রাজপথ। আর নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বছরের পর বছর ধরে চলছে এই দুর্ভোগ। রাজশাহী শহরের রাস্তাঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সৌন্দর্য বর্ধনে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হলেও বর্ষণমুখর দিনগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় তা ম্লান হচ্ছে। এত উন্নয়ন হলেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ‘জলজট’ ও জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি আজও। এবার বর্ষায় বৃষ্টি না হলেও শরতের শুরু থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে রাজশাহীতে। প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। আর তাই জলজট নিয়েও দুর্ভোগ কাটছে না মহানগরবাসীর।

বিশেষ করে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, গণকপাড়া, তালাইমারী মোড়, শিরোইল মাস্টারপাড়া, কাদিরগঞ্জ, বর্ণালী মোড়েরে পেছনে, লক্ষ্মীপুর, ঝাউতলা, ভাটাপাড়া, কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার সামনে, রাজশাহী পর্যটন মোটেল রোড, সপুরা গোরস্তানের মোড় থেকে উপশহর মোড়, গৌরহাঙ্গা রেলগেট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মোড়, শালবাগান, মালদাহ কলোনি, কয়েরদ্বারাসহ বেশকিছু এলাকায় বৃষ্টি মানেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। এ ছাড়া বৃষ্টি হলেই রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, কোর্ট চত্বরে জমে হাঁটুপানি। সকাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই দফতরগুলোয় পানি মাড়িয়ে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট সবাইকেই। বৃষ্টি হলে রাজশাহী শহরের অনেক রাস্তায় পানি জমে যায়। পাড়া-মহল্লার ছোট রাস্তায়ও জমে যায় হাঁটুপানি তাই বৃষ্টি হলেই সড়কের জলাবদ্ধতা নিয়ে চরম আশঙ্কায় থাকেন নগরবাসী। কারণ সবাইকেই পড়তে হয় চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে। তবে বৃষ্টি থামার ৩/৪ ঘণ্টার মধ্যেই এসব এলাকার সড়কের পানি নেমে যায়। কিন্তু বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তাই জনদুর্ভোগ অনেকটা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। পানি একদিক দিয়ে নামছে আবার আরেক দিক দিয়ে জমছে। ডুবছে সড়ক। আর নিচু এলাকার পানি নামতে এক থেকে দুই সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কে তাই জলজটের কারণে যানজটও লেগে থাকছে। এর ওপর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অনেক এলাকায় ড্রেন পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে। সকাল হলেই পয়ঃনিষ্কাশন বর্জ্য সড়কের ওপরে তুলে রাখা হচ্ছে। এরপর যখন বৃষ্টি হচ্ছে তখন সেই দুর্গন্ধময় পয়ঃনিষ্কাশন বর্জ্য আর বৃষ্টির পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। সেই পানি মাড়িয়ে চলাচল করায় অনেকে জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই নোংরা পানি মাড়িয়ে মসজিদে গিয়ে অনেকে নামাজও আদায় করতে পারছেন না। এর মধ্যে আবার কিছু কিছু এলাকায় উন্নয়ন কাজ চলছে। তাই সেগুলোতে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেশি। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও বেশিক্ষণ থাকে না। বেশকিছু এলাকায় ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। এ কারণে কিছু এলাকায় সমস্যা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে এই সমস্যা থাকবে না।

সর্বশেষ খবর