মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আসছে সিএনজিচালিত ৩৪০ এসি বাস

ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিআরটিসি

► বছরে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা লাভে সংস্থাটি ► বকেয়া ৬০ কোটি টাকা পরিশোধ

হাসান ইমন

ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিআরটিসি

রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) বহরে আগামী জানুয়ারিতে যুক্ত হচ্ছে ৩৪০টি সিএনজিচালিত এসি বাস। বর্তমানে বিআরটিসির বহরে থাকা মেরামত অযোগ্য ও অকেজো বাসগুলো সরিয়ে সেখানে নতুন বাসগুলো প্রতিস্থাপন করা হবে। এর মধ্য দিয়ে সিটি, আন্তজেলায় নির্ভরযোগ্য ও আরামদায়ক গণপরিবহন সুবিধা বাড়বে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন রুটে ১২ শতাধিক বাসে সেবা দিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি। কঠোর মনিটরিং, ডিজিটালাইজেশন ও জবাবদিহিতা বাড়ায় এখন নিজস্ব আয়ে লাভে রয়েছে সংস্থাটি।

এ বিষয়ে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিআরটিসির বাসের বহরে সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বর্তমানে ৯৬ শতাংশ বাস নিয়মিত সড়কে চলছে। একই সঙ্গে নতুন জনবল নিয়োগ, গ্র্যাচুইটির সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে আগামী জানুয়ারিতে ৩৪০ বাস বহরে যুক্ত হবে। ফলে নির্ভরযোগ্য ও আরামদায়ক পরিবহন সুবিধা বাড়বে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের আগের মাসে বেতন বাবদ খরচ ছিল সাড়ে ৬ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৯ কোটি টাকা। বিআরটিসির হাতে আট মাস বেতন দেওয়ার টাকা জমা রয়েছে। শুধু মুনাফা নয়, বর্তমানে মাসে ১০ লাখ টাকা করে ঋণ পরিশোধ করতে শুরু করেছে বিআরটিসি।

বিআরটিসির নথি থেকে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিআরটিসি মুনাফা করেছে ২৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই রেকর্ড ভেঙেছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে। গত অর্থবছরে ৬৩১ কোটি টাকা আয় করেছে সংস্থাটি। খরচ হয়েছে ৫৮৪ কোটি টাকা। মুনাফা হয়েছে ৪৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ট্রাক থেকে গত অর্থবছরে মুনাফা করেছে ১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। এর আগের পরিসংখ্যান ততটা সফল নয়। প্রতি বছরই ঘাটতি দিয়েই চলছিল সরকারের এই সেবা সংস্থাটি। একই সঙ্গে বিআরটিসির বহরে বাড়ছে গাড়িবহরের সংখ্যা। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিআরটিসির বহরে বাসের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮২৪টি। কিন্তু সচল গাড়ি ছিল ১ হাজার ২১০টি। এর মধ্যে সড়কে চলত মাত্র ৮৮৫টি। হাজারখানেক বাস অচল, নয়তো অলস বসেছিল। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিআরটিসির বাসের সংখ্যা ১ হাজার ৩৫০টি। এর মধ্যে সচল ১ হাজার ২৪৮টি। সড়কে চলছে ১ হাজার ২০৩টি। লিজে চলছে ৩৮টি বাস। পুরনো গাড়ি মেরামতে গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে জানালেন কর্মকর্তারা।

বকেয়া পরিশোধ : গত আড়াই বছরে বিআরটিসির যেসব অর্জন তার মধ্যে অন্যতম হলো বর্তমানে প্রধান কার্যালয়সহ ডিপো ও ইউনিটগুলোর সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা নিজস্ব আয় থেকে প্রতি মাসের ১ তারিখে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমানে তিন মাস পরপর গ্র্যাচুইটি, সিপিএফ ও ছুটি নগদায়নের টাকা অনলাইনে পরিশোধ হচ্ছে। গত দুই বছরে সিপি ফান্ড, গ্র্যাচুইটি এবং ছুটি নগদায়ন বাবদ ১ হাজার ১৫২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৩৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যান যোগদানের পূর্ববর্তী সময়ের বকেয়া বেতন বাবদ দুই বছরে ৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে পরিশোধ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর