মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নগরে নতুন বাস টার্মিনাল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

নগরে নতুন বাস টার্মিনাল

চট্টগ্রাম নগরে প্রথম বাস টার্মিনাল নির্মিত হয় কদমতলীতে ১৯৬৬ সালে। দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মিত হয় বহদ্দারহাটে ১৯৯৩ সালে। এটি নির্মাণের পর ৩১টি বছর পার হলেও নির্মাণ হয়নি আর কোনো বাস টার্মিনাল। তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ২০১৮ সালে নগরে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। নানা প্রক্রিয়া শেষে নগরে নতুন একটি বাস টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে। তৈরি হয়ে গেছে নকশা। কাজ চলছে ড্রেন, নালা, বাউন্ডারি ও ভবন নির্মাণের। নগরের কুলগাঁও বালুচরা এলাকার ৮ দশমিক ১০ একর জায়গায় টার্মিনালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি হবে বন্দর নগরীর তৃতীয় বাস টার্মিনাল।    

চসিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের করা চট্টগ্রাম সিটি মাস্টার প্ল্যানে কুলগাঁও এলাকায় মোট ২৮ একর জমিতে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ রাখা হয়। তবে চসিক প্রাথমিকভাবে ৮ দশমিক ১০ একর জায়গায় উন্নয়ন করে টার্মিনাল নির্মাণ করবে। মহাপরিকল্পনা অনুসরণ করে চসিক ২০১৮ সালে ২৯৬ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়। এটি ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের জন্য ২৬০ কোটি টাকা, ভূমি উন্নয়নে ৩ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা, অবকাঠামো উন্নয়নে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। চসিকের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরে একটি টার্মিনাল খুব জরুরি। তাই উত্তর চট্টগ্রামের জন্য একটি টার্মিনাল নির্মাণ কাজ চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এটি চালু করা হবে। চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাতুল করিম বলেন, টার্মিনাল নির্মাণের ভৌতিক কাজ চলছে। এখন ড্রেন, নালা ও বাউন্ডারির কাজ চলছে। একই সঙ্গে অন্যান্য কাজও চলমান। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার ও আন্তঃনগর উভয় ধরনের বাসই ছাড়বে। টার্মিনালটিতে মোট ১৬০টি বাস-ট্রাক পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। 

টার্মিনালের প্রবেশপথে একটি তিন তলা সুদৃশ্য ভবন থাকবে। এ ছাড়া একটি সিটি বাস টার্মিনাল, একটি আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল, ২৫টি যাত্রী বোর্ডিং লেন, ১৪টি অতিরিক্ত ওয়েটিং লেন, একটি বড় খোলা হল রুম এবং তথ্যকেন্দ্র, পুরুষ ও নারীদের জন্য টয়লেট, ২২টি টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বসার জায়গা, ওয়াইফাই সুবিধা, লাগেজ রুম, ট্যাক্সি বুকিং রুম, ফাস্ট এইড স্টেশন, রেস্তোরাঁ, এসি বাসের যাত্রীদের বসার জায়গা, বাস-ট্রাক মালিকদের জন্য অফিস এবং বাস কর্মচারীদের আবাসন কক্ষ থাকবে। উত্তর চট্টগ্রামের বাসগুলো একসময় কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে চলাচল করত। তবে এখন এই টার্মিনাল থেকে শুধু নোয়াখালীগামী বাস চলাচল করে। তাছাড়া বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম নগর এবং দক্ষিণ জেলার সাত উপজেলা এবং কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় চলাচলকারী বাসগুলো ছাড়ে। কিন্তু বাস টার্মিনাল না থাকায় জেলার উত্তর অংশে অবস্থিত অন্যান্য আট উপজেলা এবং রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং দেশের অন্যান্য জেলার মধ্যে চলাচলকারী বাসগুলোকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে নগরে যানজট তৈরি হয়। তবে কুলগাঁও এলাকায় বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মিত হলে এ সমস্যা নিরসন হবে।

সর্বশেষ খবর