মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অটোরিকশায় ঝড়ের গতি অদক্ষ চালকে ঝুঁকি

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

অটোরিকশায় ঝড়ের গতি অদক্ষ চালকে ঝুঁকি

রাজশাহী মহানগরে অটোরিকশার বেপরোয়া গতিতে জীবনের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে নগরবাসীর। অদক্ষ চালক ও নিয়ন্ত্রণহীন অটোরিকশার চলাচলে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছেন নগরবাসী। কেউ পঙ্গু হচ্ছেন, কেউ হারাচ্ছেন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। রাজশাহী নগরে এমনিতেই প্রয়োজনের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে। এসব অটোরিকশার কারণে শহরে দুঃসহ অটোজট সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশস্ত ও মসৃণ সড়কের কারণে এসব অটোরিকশার ঝড়ের গতিতে চলে। কখনো কখনো ৬০ থেকে ৭০ কি.মি. গতিতে এসব অটোরিকশা চলে। অদক্ষ চালকরা মোড় কিংবা টার্নিংয়ের তোয়াক্কা করে না। ব্যাটারিচালিত এসব অটোরিকশার বেপরোয়া চলাচলে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। অসহায় ট্রাফিক বিভাগও। অটোজট ও বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কিছু উদ্যোগ নিলেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। নগরবাসী বলছেন, রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রশস্ত ও মসৃণ হওয়ায় অতিরিক্ত গতিতে অটোরিকশা চলাচল করে কোনো বাধা ছাড়াই। প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর সাহেববাজার ও নিউ মার্কেট এলাকাসহ ব্যস্ততম রাস্তাঘাট অটোরিকশার চাপে প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আর ফাঁকা পেলেই সর্বোচ্চ গতিতে চালিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেই চলে। শহরের বড় সড়ক ছেড়েও বেপারোয়া গতিতে অটোরিকশা চলাচল করে পাড়া-মহল্লার সরু রাস্তা এবং অলিগলিতেও।

নগরবাসী বলছেন, আগে পায়েচালিত রিকশা চলাচলে শহরে যানজট ছিল না। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলতে শুরু করায় বাড়ছে যানজট। এখন আবার নতুন করে দুই আসনের পায়েচালিত রিকশায় ব্যাটারিচালিত ইঞ্জিন প্রতিস্থাপন শুরু হওয়ায় নগরীতে নতুন করে যানজটের উপদ্রব সৃষ্টি হয়েছে। ভয়ংকর বিষয় হলো এসব অটোরিকশার গতি। নগর সড়কে এখন বাইকের চেয়েও বেশি গতিতে এসব অটোরিকশা চলাচল করে।

নগরীতে সিটি করপোরেশনে নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ৮ হাজার ৩০০টি। এ ছাড়া দুই আসনের ব্যাটারিচালিত রিকশা আছে আরও ৫ হাজার ৮০০টি। তবে বাস্তবে এরও তিন-চারগুণ বেশি রিকশা-অটোরিকশা চলছে। প্রতিদিনই রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অটোরিকশা যোগ হচ্ছে নগরে। এ ছাড়া সিএনজিচালিত হিউম্যান হলার চলছে আরও প্রায় দেড় হাজার। সবই চলে বেপরোয়া গতিতে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান দিয়ে প্রতিদিন নিয়ন্ত্রণহীন চলছে রিকশা, অটোরিকশা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে চলাফেরা করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে বারবার বললেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

জাতীয় রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগ রাজশাহী নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম শান্ত বলেন, অটোরিকশা ও রিকশাতে এখন ১ হাজার অ্যাম্পিয়ার মোটর লাগানো থাকে। তাই এসব অটোরিকশার গতিও বেশি। যারা এসব গাড়ি চালান তাদের ট্রাফিক আইন এমনকি সিগন্যাল সম্পর্কেও ধারণা নেই। প্রশিক্ষণ ছাড়াই অটোরিকশা চালাতে শুরু করেন তারা। তিনি বলেন, বারবার আমরা সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানালেও কোনো কাজ হয়নি। 

সর্বশেষ খবর