মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়ছে গাড়ির চাপ

শিগগিরই খুলছে এফডিসি র‌্যাম্প। এ বছরই পুরোটা চালুর আশা

হাসান ইমন

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়ছে গাড়ির চাপ

ছবি : আবু তাহের খোকন

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে খুব কম সময়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছানো যাচ্ছে। এতে এই সড়ক ব্যবহারকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা খুশি। যান চলাচলের জন্য ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়ার পর এই পথে ক্রমেই গাড়ির চাপ বাড়ছে। ব্যক্তিগত গাড়িগুলো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করায় নিচের সড়কগুলোতে গাড়ির চাপ কমছে। একই সঙ্গে নতুন করে এফডিসির সামনের র‌্যাম্প নির্মাণকাজ শেষের দিকে। শিগগির চালু হলে ফার্মগেটের অনেক চাপ কমে যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, উদ্বোধনের প্রথম দিনে ২২ হাজার ৮০৫টি গাড়ি এই পথ ব্যবহার করেছে। পরদিন ব্যবহার করেছে ২৭ হাজার ১২১টি গাড়ি। এর পরদিন ব্যবহার করেছে ৩০ হাজার ৯১৯টি গাড়ি। এরপর ক্রমেই বাড়ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যবহৃত গাড়ির সংখ্যা। ২৭ সেপ্টেম্বর ৩৬ হাজার ৯০৬টি গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে পারাপার হয়েছে। এ ছাড়া সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ক্রমান্বয়ে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। গত ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এক দিনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা সর্বোচ্চ গাড়ির সংখ্যা ৪১ হাজার ৫৮৮টি। এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজারের বেশি গাড়ি ব্যবহার করছে এক্সপ্রেসওয়ে।

এদিকে বর্তমানে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ হিসেবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সামনে থেকে ফার্মগেট প্রান্ত অংশ পর্যন্ত যান চলাচলের উদ্বোধন করা হয়। এই পথের দূরত্ব দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। র‌্যাম্পসহ এই পথের মোট দৈর্ঘ্য ২২.৫ কিলোমিটার। ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে র‌্যাম্প রয়েছে ১৫টি। আর নতুন করে কারওয়ান বাজার অংশের র‌্যাম্প নির্মাণকাজ শেষের দিকে। আগামী মাসে কাজ শেষে চালু হওয়ার প্রত্যাশায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এই অংশ চালু হলে কারওয়ান বাজার, মগবাজারসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সহজে যাওয়া যাবে।

এই বিষয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আকতার বলেন, এফডিসির গেটের সামনে সড়কে যে র‌্যাম্পটা নামবে, তার কাজ শেষ ভাগে চলে এসেছে। কিছুদিনের মধ্যে হয়তো আমরা এটি ছেড়ে দিতে পারব গাড়ি চলাচলের জন্য। এ অংশটি যদি আমরা চালু করে দিতে পারি তাহলে ফার্মগেট অংশটার ৫০ ভাগ ট্রাফিক এদিকে চলে আসবেন। এরই মধ্যে র‌্যাম্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সংযোগ সড়কের কাজও চলছে পুরোদমে। তিনি আরও বলেন, পুরো প্রকল্পে ৩১টি র‌্যাম্পের মধ্যে ১৫টি চালু হয়েছে। এফডিসির সামনের কাজ শেষ হলে চালু করে দেওয়া হবে। এ বছরে পুরো প্রকল্প চালুর আশা : সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে (পিপিপি) তিন ধাপে উড়ালসড়ক প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপ বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত। তৃতীয় ধাপ মগবাজার রেলক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। এই প্রকল্পের নির্মাণকাল ধরা হয়েছে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পটির বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটির মাধ্যমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকায় গিয়ে শেষ হবে এই প্রকল্প। রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের জন্য এটিই হচ্ছে সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। প্রথম ধাপের এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট অংশ সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় অংশের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির ৭১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। যদি একান্তই না পারি তাহলে কিছুটা সময় বাড়ানো হতে পারে।

সর্বশেষ খবর