মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
রাজশাহী সিটি করপোরেশন

নির্মাণাধীন ভবনে চোরের আতঙ্ক

নগর পুলিশের মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম জানান, থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবন মালিকরা চুরির অভিযোগ না করলে পুলিশের কিছু করার থাকে না

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নির্মাণাধীন ভবনে চোরের আতঙ্ক

রাজশাহী নগরীতে এখন সর্বত্র বহুতল ভবণ নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। এসবের মধ্যে বেশির ভাগ ভবন পেশাদার ডেভেলপার কোম্পানি করলেও অনেক ভবন জমির মালিকরা করছেন। নগরীতে এখন শেয়ারিংয়েও গড়ে উঠছে অসংখ্য বহুতল ভবন। তবে এসব ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে পদে পদে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন ভবন নির্মাতারা। বিশেষ করে যারা ডেভেলপার ছেড়ে নিজেরা ভবন নির্মাণ করছেন তাদের বিড়ম্বনা অনেক বেশি। ভবন নির্মাণের শুরু থেকে স্থানীয় মাস্তান সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হতে হচ্ছে উচ্চ দরে। ইট, খোয়া, সিমেন্ট থেকে শুরু করে টাইলস, স্যানেটারি ও ওয়্যারিং সামগ্রীও কিনতে হচ্ছে তাদের কাছ থেকে। এক্ষেত্রে চুক্তি সাপেক্ষে স্থানীয়দেরও দেখভালের কন্টাক্ট দেওয়া হয়। তারা কৌশলে ওয়্যারিং কেবল চুরি করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। চুরি করে স্বীকার করলেও স্থানীয় সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এসব সিন্ডিকেটের পেছনে এলাকাভিত্তিক শক্তিশালী হাত আছে। রাজশাহী নগরীর বেশ কিছু এলাকায় খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রাজশাহী নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডাবতলার অদূরে বসুয়া এলাকায় একটি ১০ তলা ভবন নির্মাণ হচ্ছে। বসুয়া টাওয়ার নামের এ ভবনটি শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে ১৮ জন বিভিন্ন পেশার মানুষ নির্মাণ করছেন। সম্প্রতি ওই ভবনে বিপুল পরিমাণ (১২ কয়েল) ওয়্যারিং তার চুরির ঘটনা ঘটে। নির্মাণাধীন ভবনের মালিকরা এতে হতাশ হয়ে পড়েন। ওই ভবনে ওয়্যারিং ও স্যানিটেশন কাজের দায়িত্বে ছিলেন আরিফ নামের এক ব্যক্তি। প্রথমে তিনিও বিপুল পরিমাণ তার চুরির বিষয় অস্বীকার করছিলেন। পরে ভবন মালিকদের নানা জেরার মুখে এক পর্যায়ের চুরির কথা স্বীকার করেন। ওই ভবনের পঞ্চম তলার টয়লেটের ছাদ থেকে তিনি তারগুলো বের করে দেন। এরপর তার চুরির লিখিত জবাববন্দিও দেন। তবুও সিন্ডিকেটের হাত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। আপসের নামে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখেন। কুমারপাড়া এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন শওকত আলী। ভবনটির নির্মাণকাজে থাকা রড চুরি হচ্ছে প্রায়ই। সম্প্রতি একজনকে হাতেনাতে ধরেন পাহারাদাররা। সাগরপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন একাধিক ভবনে চুরির ঘটনা ঘটেছে। শওকত আলী জানান, চুরি সিন্ডিকেটের কাছে ভবন মালিকরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। পাহারা দিয়েও নির্মাণসামগ্রী রক্ষা করতে পারছেন না। নগর পুলিশের মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম জানান, থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবন মালিকরা চুরির অভিযোগ না করলে পুলিশের কিছু করার থাকে না।

 

 

সর্বশেষ খবর