মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

সবকিছু ফেলা হয় নর্দমায়!

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

সবকিছু ফেলা হয় নর্দমায়!

চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক মোড়ের বড় আকারের নালা। নালার পূর্ব পাশেই আছে চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ নালায়ই পাওয়া গেছে- বাথরুমের ভাঙা কমোড, পুরনো লেপ-তোশক, স্যালাইন, ইনজেকশন এবং মেডিকেলের বিভিন্ন কঠিন বর্জ্যসহ বিভিন্ন অপচনশীল বর্জ্য। কেবল এ নালা নয়, নগরের অধিকাংশ নালা-নর্দমা ও খালের অবস্থা এমনই। প্রশ্ন উঠেছে- কী ফেলা হয় না নগরের এসব নালা-নর্দমায়।

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী খালটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি নালার অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই সময় বর্জ্যে ভরপুর থাকা নালাটি অর্ধশতাধিক পরিচ্ছন্নকর্মীকে নিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছিল। 

অভিযোগ আছে, নগরের নালানর্দমাগুলোর অধিকাংশই এখন বর্জ্যে ঠাসা।  এসব বর্জ্যরে কারণে বর্ষার সময় পানি দ্রুত প্রবাহিত হয় না। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। চসিক মাঝে মাঝে নালানর্দমা পরিষ্কারের কর্মসূচি পালন করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় বড়ই অপ্রতুল। এ কারণে বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি। 

চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এই একটি নালায় কী নেই? সব ধরনের বর্জ্যে ঠাসা নালাটি। এভাবে নগরের প্রায় প্রতিটি নালানর্দমায় মানুষ বর্জ্য ফেলে। অথচ আমরা সবাই জানি, নালানর্দমায় বর্জ্য ফেললে কী সমস্যা তৈরি হয়। এ বর্জ্যরে কারণেই ভরাট হচ্ছে নালা, প্রকট হচ্ছে জলাবদ্ধতা। পরিষ্কার করার পর অপচনশীল বর্জ্যরে কারণে আবারও ভরাট হয়ে যাচ্ছে নালানর্দমা। তাই এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, মানুষ সচেতন না হলে কখনোই এ শহর পরিষ্কার রাখা যাবে না। জনগণ যদি সচেতন হয় ভৌগোলিক কারণে বর্ষায় পানি উঠলেও দ্রুত নেমে যাবে। এরপরও কেউ অযথা নালায় ময়লা ফেললে যার প্রতিষ্ঠান-বাসার সামনে ময়লা পাব তাকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরে ৯৭২ কিলোমিটার নালা রয়েছে। ২৮১ কিলোমিটার ফুটপাত এবং ৫৭টি (১৬১ কিলোমিটার) খাল আছে। এ ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টি সিডিএ মেগা প্রকল্পের আওতায় সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ করছে। বাকি ২১টি খাল নিয়ে চসিক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আবার বেশির ভাগ ফুটপাত নালার ওপর। সেখানেও দখলদারদের হানা। ২০২১ সালে এ সব খাল, নালা ও ফুটপাতের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর ওপর জরিপ চালায়। জরিপের পর মোট ৫ হাজার ৫২৭টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মোট আয়তন ছিল ১৯ কিলোমিটার।

সর্বশেষ খবর