মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
পদ্মাপাড়ে দৃষ্টিনন্দন লেক

খননের টাকা জলে

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

খননের টাকা জলে

পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য বাড়াতে বছর দেড়েক আগে নগরীর লাগোয়া প্রায় এক কিলোমিটার পদ্মা নদী খনন করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। কথা ছিল, সেখানে থাকবে পানি, তৈরি হবে দৃষ্টিনন্দন লেক। কিন্তু বাস্তবে এর কোনোটিই হয়নি। পানি তো নেই-ই, খননকৃত জায়গা দখল করে এখন চলছে ভুট্টার চাষ। খননের পর থেকে সিটি করপোরেশনের কোনো নজরদারি নেই সেখানে। ফলে কোনো কাজেই আসেনি এই ব্যয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, এ ধরনের উদ্যোগ নগর সংস্থাটি একা বাস্তবায়ন না করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে করলে এর সুদূরপ্রসারী সুফল পাওয়া যেত।

দখল, দূষণ আর বছরজুড়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পদ্মা অস্তিত্ব সংকটে ভুগলেও রাজশাহীর মূল সৌন্দর্য এখনো এই নদীকে ঘিরে। নানা কারণে পদ্মার মূল প্রবাহ এখন শহর থেকে অনেকটা দূরে সরে গেছে। মাঝখানে পড়েছে বিশাল চর। নদীতীরের সৌন্দর্য ফেরাতে দীর্ঘ সময় ধরেই সিটি করপোরেশন নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরে নগরীর দরগাপাড়া ও পাঠানপাড়া এলাকায় নদী তীরবর্তী প্রায় এক কিলোমিটার অংশ খনন করা হয়। কথা ছিল, এখানে থাকবে পানি, হবে নজরকাড়া লেক। কিন্তু বাস্তবে এর কিছুই হয়নি। দেড় বছর ধরে এখানে তাই চলছে ফসলের চাষ। কিছুদিন আগে স্থানীয় প্রভাবশালী দখলদাররা এখানে লাগিয়েছেন ভুট্টা। স্থানীয় শওকত আলী বলেন, মাটি কেটে কিছুদিন পানি রাখা হলো। এখন তো পানি নাই। ওইখানে ফসলের চাষ হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, কোনো নজরদারি না থাকায় যে যার মতো করে দখল করছে এখানে। আবার লেক তো দূরের কথা, আবর্জনাসহ শহরের তরল বর্জ্য নদীতে মিশছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সিটি করপোরেশন দেড় বছরে কোনো উদ্যোগ না নিলেও এখন দাবি করছে, তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। লেকের কাজটিও শেষ করা হবে শিগগিরাই। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম জানান, লেকটি তারা করতে চান। প্রয়োজনে আগামীতে আরেকটু গভীর করে খনন করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, সিটি করপোরেশনের এই নদী খনন করে লেক বানানোর উদ্যোগ নিয়ে তারা কিছুই জানে না। তবে সব সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করলে এর সুফল মেলে বলে মনে করেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর। তিনি বলেন, সরকারি অনুমোদন পেলে তারা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কাজ করতে চান। সিটি করপোরেশন তাদের নিজস্ব খননযন্ত্র ব্যবহার করে কাজটি করতে ব্যয় দেখিয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এর ব্যয়ও তারা নিজস্ব তহবিল থেকে মিটিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সর্বশেষ খবর