মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

মৌচাক থেকে নতুনবাজার সড়কে যানজটের ভোগান্তি

সাইফ ইমন

মৌচাক থেকে নতুনবাজার সড়কে যানজটের ভোগান্তি

অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল ৯টায় রাজধানীর মালিবাগ রেললাইন এলাকায় গণপরিবহনে ওঠেন সৌমি মুনতাহা। লিংক রোডে সকাল ১০টার মধ্যে অফিসে যেতে হবে তাকে। কিন্তু ১০টা বেজে ৩০ মিনিটেও তিনি বাড্ডা লিংক রোডে পৌঁছাতে পারেননি। দীর্ঘ জ্যামে বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত সৌমি মুনতাহা বলেন, ‘এটা এখন এই রোডের প্রতিদিনের চিত্র। বৃহস্পতিবার তো অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে থাকে। আসলে এখানে গণপরিবহনগুলোর জন্যই জায়গায় জায়গায় জ্যাম লেগে থাকে। এরা কোনো নিয়ম মানে না। ট্রাফিক আইনের বালাই নেই কারও মধ্যে। যার যেখানে যেভাবে ইচ্ছা যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে। একটি গণপরিবহন অন্য গণপরিবহনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে রাস্তা ব্লক করেও দিচ্ছে। অথচ আধা মাইল দূরের যাত্রী জানেও না কেন সামনে জ্যাম লেগে আছে। যেন এসব দেখার কেউ নেই।’

কথাগুলো আক্ষেপ করে বলছিলেন ওই যাত্রী। গতকাল মৌচাক থেকে নতুনবাজার রাস্তায় গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামার পাশাপাশি একটি বাস আরেকটি বাসের সঙ্গে লেগে যাচ্ছে। রাজধানীর এই ব্যস্ততম সড়কে গণপরিবহনগুলো অযথাই প্রতিযোগিতায় নামে। আঁকাবাঁকাভাবে বাস দাঁড় করিয়ে পেছনের বাসকে আটকে দিচ্ছে। ফলে পেছনে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ যানজট। অথচ কেউ জানতেও পারছে না বিনা কারণেই তিনি জ্যামে বসে আছেন। গণপরিবহন চালকের স্বেচ্ছাচারিতায় এভাবেই নষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের মূল্যবান সময়।

একই দৃশ্য দেখা যায় রাজধানীর অন্যান্য সড়কগুলোতেও। সকালের অফিস, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গামীদের কারণে কিছুটা যানজট হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। গত কিছুদিন ধরে অতিরিক্ত জ্যাম দেখা যাচ্ছে এই মৌচাক থেকে নতুনবাজার সড়কে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই সড়ক ব্যবহার করা যাত্রীরা। ভোগান্তি হয় ঢাকার বাইরে থেকে আসা মানুষেরও। কারণ, ঢাকার বাইরে থেকে আসা দূরপাল্লার বাসগুলোও এই সড়কে চলছে।

রামপুরা  এলাকায় বাস করেন মামুনুর রশিদ। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি। তিনি বলেন, এই রোডে আকাশ, তুরাগ, ইকবাল, গ্রিন ঢাকা, নূরে-মক্কা ইত্যাদি গণপরিবহন চলাচল করে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব বাসের যাত্রীদের। এসি বাসগুলোতে ভাড়া নৈরাজ্য চলছেই। গ্রিন ঢাকা একই রোডে ৬০ টাকা ভাড়া রাখলেও ইকবাল রাখছে ৭০ টাকা। তারপরও স্বস্তি নেই। দেখা যাচ্ছে, এক মাইল দূরে একটি আকাশ পরিবহন আরেকটি আকাশ পরিবহনের গতিপথ রোধ করে দাঁড়িয়ে আছে ইচ্ছাকৃতভাবে। যার ফলে পেছনে লেগে গেছে দীর্ঘ যানজট। এভাবেই স্বেচ্ছাচারিতা করে চলছে গণপরিবহনগুলো। দেখার নেই কেউ। এমন কি ট্রাফিক পুলিশকে বলেও কোনো সমাধান পাওয়া যায় না।

মৌচাক থেকে নতুনবাজার সড়কে সবচেয়ে তীব্র যানজট হয় রামপুরা ব্রিজ থেকে উত্তরবাড্ডা পর্যন্ত। এখানে যেন গণপরিবহনগুলো চলেই না। পুরো সড়কজুড়ে লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট। অনেক যাত্রী পরিবহন থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন। এদিকে তীব্র গরমে মানুষের কষ্ট বেড়ে হয় দ্বিগুণ। 

সর্বশেষ খবর