চট্টগ্রামে গত রবিবার ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় কখনো হালকা, কখনো মুষলধারে বৃষ্টি হয়। পতেঙ্গার আবহাওয়া অফিস এই সময়ে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে। কিন্তু তিন ঘণ্টার হালকা-মাঝারি বৃষ্টিতেই নগরের অনেক নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। পানি জমে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। সকাল সকাল বৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয় অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগামীদের।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করে। তবে বর্তমানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। একই সঙ্গে চসিকের উদ্যোগে বারইপাড়া খাল খননের কাজও চলছে। তাছাড়া চসিকের উদ্যোগে নগরের খাল-নালা ও ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কারের কর্মসূচিও চলছে। অন্যদিকে মেগা প্রকল্পের বাইরের ২১ খাল সংস্কার-সম্প্রসারণের জন্য সমীক্ষা কাজ শুরু হবে। কাজগুলো শেষ হলে জলাবদ্ধতা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএ ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে। তবে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় দুটিই বেড়েছে। অনুমোদন পাওয়া নতুন আরডিপিপি অনুযায়ী জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ব্যয় ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা এবং সময় ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি ৭০ শতাংশের বেশি এবং ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ২২০ কোটি টাকার মতো। তবে প্রকল্পের অগ্রগতিতে এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা। এ জটিলতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ হিজড়া, মির্জা, চশমা এবং জামালখান খালের কাজে অগ্রগতি আশানুরূপ হয়নি। ফলে খাল সংশ্লিষ্ট এলাকায় চলতি বর্ষায়ও জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নগরের অভ্যন্তরের এসব খালের মূল অংশের তিন ভাগের এক ভাগ দখল করে তৈরি করা হয়েছে আবাসন ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। ফলে এসব এলাকায় খাল সংস্কারের কাজ করা সম্ভব হয়নি বলে জানা যায়। মেগা প্রকল্পের অধীন নগরের ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টি খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন করা হচ্ছে।