বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঢাকায় ভেঙে পড়েছে বর্জ্য ব্যবস্থা

হাসান ইমন

ঢাকায় ভেঙে পড়েছে বর্জ্য ব্যবস্থা

দেশে চলমান কারফিউ ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে রাজধানীতে ভেঙে পড়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। রাস্তার পাশে বর্জ্যরে স্তূপ। প্রতিটি বাসাবাড়ির সামনেও রয়েছে বর্জ্য। কোথাও সড়কে বর্জ্যরে ভাগাড় তৈরি হয়েছে। গত কয়েক দিনে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বর্জ্য না নেওয়ায় ভেঙে পড়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এসব বর্জ্যরে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ নগরবাসী। কোটা আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে গত সপ্তাহে বন্ধ হয়ে যায় বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা। বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবার থেকে বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ বন্ধ করে দেয় পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। এতে ময়লা আবর্জনার পচা গন্ধে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজার-সংলগ্ন রামপুরা-ডেমরা সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড় তৈরি করেছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। যদিও মেরাদিয়া বাজারে দক্ষিণ সিটির সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) রয়েছে। এই এসটিএসটি এরই মধ্যে ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। এতে মূল সড়কের পাশে বাসাবাড়ির বর্জ্য রাখছেন কর্মীরা। যদিও গত শুক্র ও শনিবার বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করেনি পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। রবিবার সকালে এই এসটিএস এলাকার বর্জ্য সংগ্রহে রত ছিল পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। এসটিএসের সামনে কথা হয় এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সঙ্গে। তিনি বলেন, গত দুই দিন বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য নিতে পারিনি। কারণ, শুক্রবার এখানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের অনেক মারামারি হয়েছে। নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাসা থেকে বের হইনি। আজ (রবিবার) পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত দেখে সকালে বের হয়েছি। সড়কে ময়লা ফেলার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, চলমান সংঘাতময় অবস্থায় গাড়ি আসতে পারছে না। এতে এসটিএস অনেকটা ভরাট হয়ে যাওয়ায় রাস্তার পাশে ময়লা রাখছি। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গাড়ি এসে ময়লা নিয়ে যাবে।

একই অবস্থা দক্ষিণ বনশ্রীর জোড়া খাম্বা এলাকায়। সেখানে রাস্তার পাশে বর্জ্যরে স্তূপ দেখা গেছে। মেরাদিয়া থেকে সিপাহিবাগ সড়কের কয়েকটি স্থানে ময়লার স্তূপ দেখা গেছে। এ ছাড়া পশ্চিম রামপুরা ওয়াপদা সড়কেও বর্জ্যরে স্তূপ দেখা গেছে। দুই সিটি করপোরেশনের ১৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত অধিকাংশ ওয়ার্ডের বাসা বাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ করেনি সংস্থা দুটির কর্মীরা। এর মধ্যে উত্তরা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, মিরপুর, ধানমন্ডি, কলাবাগান, খিলগাঁও, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকা অন্যতম।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, চলমান পরিস্থিতির কারণে বর্জ্য সংগ্রহ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। রবিবার থেকে কিছুটা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বর্জ্য সংগ্রহে সমস্যা হবে না। গত কয়েক দিন আগে উত্তর সিটি করপোরেশন অঞ্চল ৩ ও ৪-এ অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারীরা। এতে সিটি করপোরেশনের ৩২টি গাড়ি আগুনে পুড়ে যায়। আরও ১৭টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এসব গাড়ির মধ্যে অধিকাংশই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার। বাকিগুলো পিকআপ, ট্রাক ও প্রাইভেট কার রয়েছে।

উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, গত কয়েক দিনে আন্দোলনকারীরা ৪৯টি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুনে পুড়ে দিয়েছে। এতে বর্জ্য সংগ্রহে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর