মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বদলে দেবে চট্টগ্রামের দিগন্ত

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বদলে দেবে চট্টগ্রামের দিগন্ত

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে পরীক্ষামূলক যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গরূপে কখন যানবাহন চলাচল করবে তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি চালু হলে বদলে যাবে যানজটপ্রবণ চট্টগ্রামের যোগাযোগের দিগন্ত। শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাবে নগরকেন্দ্রে। দূর হবে নিত্য যানজটের দীর্ঘ দুঃসহ ভোগান্তি। বন্দর নগরীর মানুষ যাতায়াতে স্বস্তি পাবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ‘মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’টি নির্মাণ করছে। গত বছরের ১৪ নভেম্বর এটি উদ্বোধন করা হয়।

এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আপাতত চলাচল করবে শুধু প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস। বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না। এক্সপ্রেসওয়ের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে যাত্রীরা দুই ঘণ্টার পথ ৩০ মিনিটে যেতে পারছে।

জানা যায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। গত ২৯ আগস্ট থেকে পরীক্ষামূলক প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চলাচল করছে। এর মাধ্যমে যানবাহন চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা এবং কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি কোনো সমস্যা পাওয়া যায় তাহলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে তা সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এখন এক্সপ্রেসওয়েতে লালখান বাজার থেকে গাড়ি ওঠার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর পতেঙ্গার দিক থেকে ওঠা গাড়ি নামছে টাইগারপাসে। অন্যদিকে পতেঙ্গা প্রান্তে গাড়ি ওঠানামা করছে। প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চলাচলের সুযোগ থাকলেও মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারছে না।   

সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক যানবাহন চলাচল শুরু করেছে। এখন যানবাহন চলাচল পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা বিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে সংশোধন করা হবে। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কখন পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে যান চলাচল করা হবে। তিনি বলেন, লালখান বাজার মোড়ে র‌্যাম্প দিয়ে নামার সময় যানজট নিয়ে সামান্য সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ইতিমধ্যে সেটা নিরসন করা হয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফা সময় বৃদ্ধি করে মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। এ সময়ে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায় ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা।

বর্ধিত সময়েও শেষ হয়নি কাজ। এখন আরেক দফা সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত করার জন্য আবেদন করেছে সিডিএ। অন্যদিকে এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্পের (মূল উড়ালসড়ক থেকে ওঠানামার পথ) কাজ শেষ না হওয়ায় গাড়িগুলো নগরের লালখান বাজার থেকে সরাসরি পতেঙ্গা পর্যন্ত যাতায়াত করছে। নগরীর লালখান বাজার থেকে গাড়ি ওঠার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর এই প্রান্তে গাড়ি নামছে টাইগারপাসে। এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন অংশে ১৫টি র‌্যাম্প আছে। বর্তমানে একটির কাজ প্রায় শেষ ও দুটি কাজ চলছে।

সর্বশেষ খবর