মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

টাউন হল কবে আবার সরগরম হয়ে উঠবে?

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

টাউন হল কবে আবার সরগরম হয়ে উঠবে?

কুমিল্লা টাউন হল নগরীর প্রাণকেন্দ্র্রের একটি প্রাচীন জনপ্রিয় মাঠ ও স্থাপনা। ভবনে রয়েছে পাঠাগার ও মিলনায়তন। পুরো নাম বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন। সেই টাউনহল জরাজীর্ণ ছিল। সম্প্রতি ভবনটি ভাঙচুর হয়েছে। সেই টাউন হল কবে পাঠকে আবার সরগম হয়ে উঠবে সেই প্রশ্ন পাঠকদের।

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে গেলে নগরীতে বিজয় মিছিল বের হয়। এ সময় কিছু লোক টাউন হলে ভাঙচুর করে। বইপত্র লুট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, টাউন হল মূলত ছিল বইয়ের কারাগার। সাবেক এমপি বাহাউদ্দিন বাহারের বলয়ের ছাড়া কাউকে এখানে সদস্য করা হতো না। বই পড়ার সুযোগ পেত না।

এ ছাড়া এটি অনেকটা দলীয় অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সে কারণে এর ওপর হয়তো মানুষ ক্ষোভ দেখিয়েছে। তবে বই নষ্ট ও লুট সমর্থনযোগ্য নয়। এটি পাঠকের কলরবে আবার মুখরিত হয়ে উঠুক। বীরচন্দ্র গণপাঠাগারের কেয়ারটেকার রঞ্জিত দাস জানান, ওই দিন দুপুরে তিনি খাবার খেতে বাইরে যান। এরপর শোনেন পাঠাগারে হামলা হয়েছে। আগুনে তার কক্ষ পুড়ে গেছে। সঙ্গে অনেক বইও পুড়ে গেছে।

বীরচন্দ্র গণপাঠাগারে গিয়ে দেখা যায়, কেয়ারটেকারের কক্ষ পুড়ে গেছে। দোতলায় সব কটি আলমারি ভেঙে পড়ে আছে। অনেক ম্যাগাজিন ও বেশ কিছু বই এলোমেলো পড়ে আছে। মেঝেতে কাচের টুকরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ওই ঘটনার পর পাঠাগারের সদস্যসহ গণমান্য ব্যক্তিরা সেখানে পরিদর্শনে যাচ্ছেন। সংগঠক শাহ মোহাম্মদ সেলিম জানান, ‘বইগুলো আমাদের কুমিল্লার সম্পদ। এগুলো যারা নিয়েছেন, তারা যেন স্বউদ্যাগে লাইব্রেরিতে ফিরিয়ে দেন। এগুলো শুধু কুমিল্লার নয়, সমগ্র বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ। বইগুলো যারা লুট করেছেন, তারা যেন দয়া করে বইগুলো ফিরিয়ে দেন।

ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর বলেন, এখানে ১০০ বছর আগের বই আছে পাঁচ হাজারের বেশি। এনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটেনিকার প্রথম সংখ্যা থেকে প্রায় সব কটি সংখ্যাই ছিল। এখানে মহাকবি ফেরদৌসি রচিত শাহানামার প্রথম সংস্কারণের কপি আছে। আধি রাজমালার প্রথম সংস্করণেরও কপি আছে। অনেক পুঁথি আছে। এগুলো বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ। বইগুলো যারা লুট করেছেন, তারা যেন দয়া করে বইগুলো ফিরিয়ে দেন।

সর্বশেষ খবর