গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। অসহ্য লাগছে। এমন পরিস্থিতিতে ত্বকের পরিচর্যা! ব্যাপারটা খানিক অস্বস্তিকর হলেও খুব একটা কঠিন নয়। এমনিতে প্রচ- গরম, তার ওপর অবহেলা করে ত্বকের ক্ষতি নিশ্চয়ই কারও কাম্য নয়। এজন্য প্রয়োজন ধারাবাহিকতা। কেননা, এমন দিনে ত্বক ঠিকমতো পরিষ্কার করা, আর্দ্র রাখা এবং সূর্যালোক থেকে সুরক্ষিত রাখা অতীব জরুরি।
সানস্ক্রিন : অনেকে মনে করেন, ‘গরমকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে না’। ধারণাটি ভুল। সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি ত্বকের সংস্পর্শে ভীষণ ক্ষতি করে। তাই গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীত যে কোনো মৌসুমেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। নিউ জার্সির স্কিন এক্সপার্ট বলেন, ‘জিঙ্ক অক্সাইড এবং টাইটেনিয়াম অক্সাইড সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন কেবল ক্যান্সার সৃষ্টিকারী অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখে না বরং ত্বককে অকালে বয়সের ছাপ পড়া থেকেও রক্ষা করে।’
পর্যাপ্ত সানব্লক ব্যবহার না করা : শুধু সানব্লক ব্যবহার করলেই হবে না, তা ব্যবহার করতে হবে পরিমাণ মতো। এসপিএফযুক্ত মেকআপ নিজে থেকে সুরক্ষা দেয় না। তাই এর সঙ্গে এসপিএফ ৩০ বা ৫০ যুক্ত লোশন ব্যবহার করা উপকারী। সকালে সানব্লক ব্যবহারের পরেও তা পুনরায় ব্যবহার করতে হবে। নিউইয়র্কভিত্তিক বোর্ড প্রত্যয়িত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ হ্যাডলি কিং বলেন, ‘প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর এবং সাঁতার কাটা বা ঘাম বেশি হলে আবার সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায় ত্বক সুরক্ষিত থাকবে না। এ ছাড়া উন্মুক্ত থাকে এমন স্থান মুখ, গলা ও ঘাড় ইত্যাদিতে সানব্লক ব্যবহার করা জরুরি।
এক্সফলিয়েট করা : এক্সফোলিয়েনের কাজ কী? সহজভাবে বললে, এক্সফোলিয়েশন ত্বকের বাইরের স্তর থেকে মৃত কোষ অপসারণের এক প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে ত্বক থেকে ময়লার স্তর অপসারণ হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়। পাশাপাশি এটি ত্বকের যতেœর প্রসাধনীগুলোকে ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ হ্যাডলি কিং বলেন, ‘গরমে ঘাম, তেল ও ত্বকে ময়লা জমার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই অধিকাংশ মানুষ বার বার ত্বক পরিষ্কার করে। ফলে ত্বকে জ্বলুনি দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ত্বক পরিচর্যার সাধারণ ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।’ মাঝে মধ্যে ঘাম, তেল বা ময়লা বেশি দেখা দিলে মৃদু ফোমিং ফেস ওয়াশও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভারী ক্রিম ব্যবহার : গরমকালে ভারী মেকআপের পরিবর্তে হালকা ফর্মুলার প্রসাধনী ব্যবহার করুন। হ্যায়ালুরনিক অ্যাসিড-সমৃদ্ধ হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ললিস।
শরীরের অযত্ন : মুখের মতো দেহেরও প্রতিদিন যত্ন প্রয়োজন, বিশেষত গ্রীষ্মকালে। ডা ললিস বলেন, ‘গোসলের পরে মুখ ও পুরা শরীর আর্দ্র রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। সেরামাইড, হ্যায়ালুরনিক অ্যাসিড-সমৃদ্ধ লোশন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করা ত্বকের মলিনভাব ও ব্রেকআউট কমায়।’
আর হ্যাঁ, পানি পান ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বক সুস্থ, সুন্দর ও সতেজ রাখতে দৈনিক কমপক্ষে আট থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র : ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম