রূপচর্চায় গ্লিসারিনের ব্যবহার বহু আগের। ত্বককে করে ময়েশ্চারাইজ। ফলে হাত-পায়ের ত্বক হয় কোমল ও মোলায়েম। পাশাপাশি ঠোঁট ফাটা রোধেও দারুণ কার্যকর গ্লিসারিন।
গ্লিসারিন ব্যবহারে কিছু সময়ের জন্য ত্বকের শুষ্কতা দূর হলেও এর বেশি ব্যবহার ঠিক নয়। কেননা দীর্ঘদিন ধরে ত্বকে গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ত্বক আবার শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। গ্লিসারিন ত্বকের স্বাভাবিক তেলজাতীয় উপাদান শোষণ করে নেয় বলে এমনটা হয়। এ জন্য ময়েশ্চারাইজার হিসেবে দারুণ কার্যকর হলেও শীতের সময় গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হবে বুঝে-শুনে।
কেন গ্লিসারিন ব্যবহার করবেন?
শীত আসতে এখনো ঢের দেরি। কিন্তু আবহাওয়ার পরিবর্তনে বাড়ছে রুক্ষতা ও শুষ্ক ত্বকের সমস্যা। আর সমস্যা সমাধানে ক্রিম বা লোশনের চেয়ে বেশি উপকারী গ্লিসারিন। তবে সহজলভ্য হওয়ায় দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত নয়। এটি ত্বকের রুক্ষতা দূর করে। ত্বকের নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে। এতে থাকা হিউমেকট্যান্ট এবং হাইগ্রোস্কোপিক উপাদানগুলো তৈলাক্ত ত্বকে সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে ব্রণ, অ্যাকনে, ব্ল্যাকহেডস ইত্যাদির মতো সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এতে কোনো ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ নেই বলে শুধু বয়স্করা নয়, ছোটরাও ব্যবহার করতে পারে। গ্লিসারিন ব্যবহারে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। এ ছাড়া মেছতা, চুলকানি, প্রদাহ ও কর্কশভাব কাটিয়ে ত্বককে রাখে লাবণ্যময়। অনেক সময় ত্বকে পানি স্বল্পতা কমে যায়। গ্লিসারিন ত্বকের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
মুখত্বকের প্রাকৃতিক টোনার
ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ময়েশ্চার ফেরাতে অনেকেই শুধু গ্লিসারিন ব্যবহার করেন। কিন্তু সবচেয়ে ভালো এর সঙ্গে গোলাপজল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করা। অবশ্য শুধু গ্লিসারিন আর অলিভ অয়েলের মিশ্রণও ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া মুখত্বকে গ্লিসারিন সরাসরি ব্যবহার করবেন না। গ্লিসারিন ব্যবহারের আগে কয়েক ফোঁটা পানি মিশিয়ে নিতে হবে। ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখতে দুই চা চামচ পানি বা গোলাপ জলে এক চা চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটিতে তুলা ভিজিয়ে ত্বকের টোনার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখতে দারুণ উপকারী গ্লিসারিন। পাশাপাশি লিপবামের জারে কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে নিতে পারেন। রোজ ব্যবহারে ঠোঁট নরম থাকবে।
হাত-পায়ের যত্নে গ্লিসারিন
কয়েক ফোঁটা পানির সঙ্গে ১-২ ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ বডি লোশনের বোতলে মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে নিন। এখন থেকেই প্রতিদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। এটি ত্বকে লোশন হিসেবে কাজ করবে। সামান্য বেকিং সোডা, এক চা চামচ গ্লিসারিন ও গোলাপ জল, ২ চা চামচ মুলতানি মাটি, ২ চা চামচ ব্রাউন সুগার একসঙ্গে মিশিয়ে একদিন পরপর হাত-পায়ের ত্বকে আলতো করে সার্কেল এন্টি সার্কেল করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। মিশ্রণটি ত্বককে কয়েক মিনিটেই উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ করে।
গোসলে গ্লিসারিন ব্যবহার
গ্লিসারিন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই তো সাবান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক সাবানে গ্লিসারিন ব্যবহার করে থাকে। এক মগ পানির সঙ্গে এক চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে গোসলের পর এই পানি গায়ে ঢেলে নিন। এরপর আর শরীরে পানি ঢালবেন না।
লেখা : উম্মে হানি