বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ঘরোয়া জিনিসপত্রের যত্ন-আত্তি

ঘরোয়া জিনিসপত্রের যত্ন-আত্তি

শখের ঘরে আধুনিক যন্ত্রপাতি কমিয়ে দিয়েছে ঝামেলা। এসব ব্যবহৃত অনুষঙ্গ বেশ স্মার্ট। আর এসব ইলেকট্রনিক্স পণ্য বদলে দিয়েছে আমাদের জীবনযাত্রা। সহজ করেছে দৈনন্দিন কর্ম পরিকল্পনা। কিন্তু ঘরের এসব আধুনিক  জিনিসপত্রেরও দরকার বিশেষ যত্ন।

আজকাল শহুরে রান্নাঘরের আধুনিক অনুষঙ্গের মধ্যে ফ্রিজার বা রেফ্রিজারেটর, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াটার ফিল্টার, ইলেকট্রিক কেতলি, রাইস কুকার, ব্লেন্ডার, গ্রাইন্ডার, মিক্সার, মিট টেন্ডারাইজার, টোস্টার আর এয়ারফ্রায়ারের ব্যবহার অনেকাংশে বেড়েছে। এ ছাড়া অন্দরের ধুলোবালি পরিষ্কারে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, কাপড় ধোয়ার ওয়াশিং মেশিন এবং বাতি, ফ্যান থেকে শুরু করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) ব্যবহারও এনেছে আরামদায়ক জীবন। কিন্তু ঘরে এমন জিনিসপত্র থাকলেই হবে না, এসব ঘরোয়া যন্ত্রপাতি ঠিক রাখতে; এমনকি এর দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন-আত্তি। জেনে নিন কিছু টিপস।

মাইক্রোওভেন; ঝামেলাহীন ও সহজে খাবার গরম করার ইলেকট্রনিক্স পণ্য। বিদ্যুৎশক্তিতে চালিত পণ্যটি যেন বিপদের কারণ না হয়, সেজন্য ওভেন প্রুফ বাটি ব্যবহার করতে হবে। ওভেনের হুড ও দরজাটি পরিষ্কার রাখা উচিত, যেন বাইরে থেকে দেখা যায়। তাই মাঝে মাঝে শুকনো কাপড় দিয়ে ওভেনের বাইরেরটা মুছে নিতে হবে। ওভেনের পেছনের দিকে যেন কোনো ময়লা না জমে বা পোকামাকড় না ঢোকে। কাজ শেষে ওভেন ঠাণ্ডা হলে কোনো প্রকার খাবার বা তেল, ঝোল পড়ে থাকলে শুকনো সুতি কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নইলে ময়লা জমে বা ধুলোবালি আটকে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

আধুনিক স্মার্ট কিচেনে ডিশওয়াশারের ব্যবহার আজকাল খুব জনপ্রিয়। বিদ্যুৎচালিত এই ডিশওয়াশার চালাতেও অনেক খরচ হয়।   মাইক্রোওভেনের মতো একইভাবে ডিশওয়াশারের যত্ন নিতে হবে।

ফ্রিজার বা রেফ্রিজারেটর দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে অনেক সময় খাবার পড়ে ফ্রিজের ভিতরে দাগ হয়ে যায় বা তেল-মসলা জমে চটচটে ভাব দেখা দেয়। কুসুম গরম পানি ও ভিনেগারের মিশ্রণ দিয়ে মাঝে মাঝে ফ্রিজারটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। যেসব দাগ উঠতে চায় না তা তোলার জন্য বেকিং সোডা, মাইল্ড সোপ ব্যবহার করতে পারেন। ফ্রিজের বাইরের অংশ পরিষ্কার করার জন্য নরম কাপড় লিকুইড ক্লিনজারে ডুবিয়ে মুছে নিতে হবে।

কাপড় ধোয়ার যন্ত্র হিসেবে ওয়াশিং মেশিন কেবল কাপড় ধুতেই সাহায্য করে না, কোনো কোনোটিতে কাপড় শুকানোর ব্যবস্থাও থাকে। ওয়াশিং মেশিনের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। নিয়মিত ওয়াশিং মেশিন পরিষ্কার রাখতে হবে। অনেক সময় ডিটারজেন্ট সাবান জমে মেশিনের ভিতরে অনেক অংশ ব্লক হয়ে যায়। তাই ধোয়ার কাজ হলে ভালোভাবে মেশিনের ভিতরটা ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। একইভাবে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মতো যন্ত্র দিয়ে ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখা যায় সহজেই। ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের ব্যাগ বা ডোবাকে পুরোপুরি পরিপূর্ণ হতে দেবেন না। ছাঁচ এবং দুর্গন্ধ পেতে শুরু করার আগে ফিল্টারটি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। প্রতি দুই সপ্তাহে মোটরচালিত ব্রাশ পরিষ্কার করতে হবে।

ইলেকট্রনিক হেঁশেল-যন্ত্র যেমন টোস্টার, কেতলি, স্যান্ডউইচমেকার, ফ্রায়ার, রাইস কুকার, এগ বিটার, ব্লেন্ডার, গ্রাইন্ডার ইত্যাদি কাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই আনপ্লাগ করে রাখতে হবে। ব্যবহার শেষে এসব হেঁশেল-যন্ত্র পরিষ্কার করে রাখতে হবে। পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সাবান পানি দিয়ে মুছে, অন্য কাপড় দিয়ে ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে ফেলতে হবে। চা, কফি বা রান্নার জন্য যতটুকু পানি গরম করা দরকার, ঠিক ততটুকুই গরম করতে হবে। চা-কফি মেকার এবং কেতলি ব্যবহার শেষে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে পানি ও ভিনেগারের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। যারা দিনে বেশ কয়েকবার চা-কফি পান করতে পছন্দ করেন, তারা সব মৌসুমেই ফ্লাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।

লেখা : নূরজাহান জেবিন

সর্বশেষ খবর