বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বর্ষায় নীল সাজ-পোশাক

বর্ষায় নীল সাজ-পোশাক

আকাশে ঘন মেঘ, দিনভর বৃষ্টির প্রভাব জীবনযাপনে। আর এই রিমঝিম বৃষ্টির সঙ্গে শাড়ির সখ্য যেন বহুদিনের। তা আবার যেনতেন শাড়ি না। এই জায়গাটা ধরে রেখেছে বর্ণিল সিল্ক শাড়ি। তবে বৃষ্টির দিনে নীল রংই প্রাধান্য পায় বেশি।  রইল তারই বিস্তারিত...

 

সময়টা এখন বর্ষাকাল। সময় অসময়ে আকাশে মেঘের আনাগোনা। কখনো বা ঝিলিক দেওয়া রোদ। কখনো বৃষ্টিজলে ধোয়া আকাশ সাজে রংধনুর রঙে। বর্ষার এই বিচিত্র রঙের খেলায় মত্ত হতে ইচ্ছা করে আমাদেরও। তাই তো প্রকৃতির এই রূপ বদলের সঙ্গে বদলে যায় সাজ-পোশাকের ধরন। বছরের এ সময়টাতে ফ্যাশন হাউসগুলো বর্ষার কথা মাথায় রেখে পোশাক তৈরি করে। পোশাকের কাপড়, রং ও ডিজাইন নির্বাচন করা হয় বিশেষভাবে।

 

বর্ষা এলেই বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস, বুটিক শপ, অনলাইনে পোশাক বিক্রির পেজের ডিজাইনাররাও তাদের পোশাকে নীল রংকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কারণ নীল হলো আভিজাত্য, শান্তি, একতা ও সম্প্রীতির রং। বৃষ্টি, বর্ষার ফুল, লতাপাতা, মেঘলা আকাশ উঠে আসে পোশাকের মোটিফ হিসেবে। এ ছাড়া ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট, হালকা অ্যামব্রয়ডারি ও চুমকির কাজ থাকতে পারে পোশাকগুলোতে। রঙে প্রাধান্য পায় সবুজ, নীল, ছাই, আকাশি।

 

বর্ষার শাড়ি, থ্রি-পিস, সিঙ্গেল কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়াতে আকাশ আর জলধারায় বেদনা ও ভালোবাসার অনুভূতি জাগাতে প্রকৃতি থেকে নেওয়া নীল ফুলের অনুপ্রেরণায় ফ্লোরাল মোটিফ আর নীল, সাদা রঙের বিভিন্ন গ্রাফিক্যাল জ্যামিতিক ফর্মের অনবদ্য উপস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে এবং গরমের কথা মাথায় রেখে কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে স্বাভাবিক ভাবে ব্যবহার উপযোগী আরামদায়ক সুতি, জর্জেট, সিল্ক, হাফ সিল্ক, লিলেন, ভয়েল, স্লাব কাপড়। ফ্লোরাল প্রিন্টের জর্জেট এবং অরগ্যান্ডি শাড়ি এখন অনেকেরই পছন্দ। কারণ এগুলোতে প্রিন্ট করাই থাকে।

 

বৃষ্টির সময়টাতে জর্জেট বা সিল্কের কাপড়কে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশেষ করে যারা খুবই ব্যস্ত থাকেন, পোশাকের যত্ন নেওয়ার সময় কম তাদের জন্য এই আবহাওয়ায় সিল্ক, হাফসিল্ক, জর্জেট, মিক্সড কাপড়ের পোশাক পরা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ এ ধরনের পোশাক ভিজলে দ্রুত শুকিয়ে যায়। দাগ লাগলেও তা উঠানো সহজ। কিন্তু সুতি কাপড়ে ঘটে উল্টোটা। তাই কোনো রকম ঝামেলা পোহাতে না চাইলে যে কোনো অনুষ্ঠানে পরে যেতে পারেন অ্যান্ডি সিল্কের পোশাক। এগুলো পরলে পোশাকের সৌন্দর্যহানির কোনো রকম চিন্তা আপনাকে পোহাতে হবে না।

 

বর্ষার দিনে রাজশাহী সিল্ক, সিফন জর্জেট কাপড় হবে বেশ সহনশীল। সহজে ধোয়া যায় আবার ভিজলে তাড়াতাড়ি শুকায়। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে চাইলে অন্যান্য উজ্জ্বল রঙের পোশাক নির্বাচন করতে পারেন। কারণ মেঘলা দিনে আবহাওয়া অনেকটা অন্ধকার থাকে। রং যেন দৃষ্টিকটু না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বৃষ্টির মৌসুমে বেগুনি, মেজেন্টা, গাঢ় সবুজ, লাল, হলুদ রংগুলো দারুণ মানায়। শুধু শাড়ি নয়, সালোয়ার-কামিজের ক্ষেত্রে সুতির বদলে সিনথেটিক ফেব্রিকের কাপড় বেছে নিতে পারেন। বর্ষায় লং ড্রেস না পরাই ভালো। এতে পায়জামার সঙ্গে সঙ্গে কামিজেও কাদা লেগে যায়। শাড়ি পরলে অবশ্যই তা যেন গাঢ় রঙের জর্জেট হয়। বর্ষার দিনে পোশাকের যত্ন নিতে হয় একটু বেশি। নইলে পরিহিত পোশাকটি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সে জন্য পোশাকে কাদা লাগলে দ্রুত ধুয়ে নিন। এরপর পুরো কাপড় ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হবে। বর্ষায় ভালোভাবে কাপড় শুকানো দরকার। তা না হলে কাপড় নষ্ট হতে পারে। কাপড় ভালো করে শুকানোর পর ইস্ত্রি করে নিন। একবারে চিন্তা দূর।

 

বর্ষায় মুখের সাজ হালকা হলেই ভালো লাগবে। কপালে মানানসই টিপ এবং চোখে নীল, সবুজ বা ছাই রঙের কাজলের টান দিতে পারেন। চোখের সাজের ক্ষেত্রে ওয়াটারপ্রুফ কাজল, মাশকারা, লাইনার ব্যবহার করুন। আইশ্যাডো দিলে হালকা কোনো রং বেছে নিন। হালকা ফেস পাউডার লাগাতে পারেন। লিপস্টিকের বেলায় গ্লোসি হলেই ভালো। হালকা গোলাপি, বাঙ্গি, হালকা বাদামি ধরনের রং বাছাই করতে পারেন লিপস্টিকের ক্ষেত্রে। এই সময় চুলগুলোকে গুছিয়ে রাখতে পারেন। চাইলে পনিটেই, খোঁপা কিংবা বেণির সাজে সাজতে পারেন। ফেঞ্চ বেণিও করতে পারেন। সালোয়ার-কামিজ বা জিন্স, টপ, ফতুয়া যে কোনো পোশাকের সঙ্গে বেশ মানানসই। চাইলে বর্ষার কোনো ফুল গুঁজে নিতে পারেন চুলে।

 

লেখা : ফেরদৌস আরা

সর্বশেষ খবর