ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় তেলের ভূমিকা কম-বেশি সবারই জানা। এ কথাও ঠিক যে, সব ধরনের তেল সব ধরনের ত্বক এবং চুলের জন্য উপযুক্ত নয়। তাছাড়া প্রত্যেক তেলেরই কিছু বিশেষ গুণ রয়েছে। আবার তেল সম্পর্কে অনেকের মনে বহু ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে। ফলে আশানুরূপ ফল না পেলে দোষী হয় সেসব তেলই।
তেলে ত্বক ময়েশ্চারাইজ হয়
‘ময়েশ্চার’ শব্দের অর্থ ‘আর্দ্রতা’। আর আর্দ্রতা মানে পানি। অর্থাৎ তেল-পানির মিশেল এককথায় অসম্ভব। সুতরাং তেল ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করবে, ধারণটি ভুল। বরং বলা যেতে পারে, তেল ত্বককে নরম করে। তাছাড়া ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে গেলে কোনো উপাদানের ‘হিউমেকট্যান্ট’ (বাতাসের জলীয় বাষ্প শোষণ করার ক্ষমতা) ক্ষমতা থাকা চাই। যা তেলের নেই। তবে তেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই রূপচর্চায় তেল নিশ্চয়ই ব্যবহার করুন, তবে তা ময়েশ্চারাইজারের বিকল্প হিসেবে নয়।
রূপচর্চায় শুরুতে তেল মাস্ট
তেল এমন উপাদান, যা ত্বকের ওপরে আস্তর তৈরি করে, যা ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। ত্বকে তেল ব্যবহারের পর যদি অন্য কোনো প্রসাধন ব্যবহার করেন, তা সহজে এই আস্তরণ ভেদ করে ত্বকে পৌঁছতে পারে না। ফলে ত্বকে কোনো পুষ্টিও পৌঁছায় না। তাই রূপচর্চায় তেল ব্যবহার করলে একদম শেষ ধাপে করুন। এতে ত্বকে আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় থাকবে।
চুলে বেশি তেল ব্যবহার ভালো
চুলে আপনি কী তেল ব্যবহার করছেন, তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো কতটা পরিমাণে ব্যবহার করছেন। প্রত্যেকের চুলের ধরন যেমন এক নয়, তেমনি প্রয়োজনীয়তাও আলাদা। তাই একগাদা তেল লাগালেই ফল ভালো পাবেন, তা নয়। শুরু করুন কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে। ভালোভাবে দুই হাতের তালুতে ঘষে স্ক্যাল্প থেকে চুলের ডগা অবধি মালিশ করুন। অতিরিক্ত তেল স্ক্যাল্পকে তৈলাক্ত করে। এতে উপকার তো হয়ই না, বরং প্রয়োজনীয় পুষ্টিটুকুও চুলে পৌঁছায় না।
তৈলাক্ত ত্বক ও চুলে তেল নয়
তথ্যটি আংশিক সত্য। তৈলাক্ত ত্বক বা চুলে যেহেতু তেলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি, তাই এ ধরনের ত্বক এবং চুলে তেল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সব ধরনের তেল তৈলাক্ত ত্বক ও চুলের জন্য উপযুক্ত নয়। তবে নির্দিষ্ট কিছু তেল ব্যবহার করলে কিন্তু উপকারই পাবেন। আমন্ড, জোজোবা ইত্যাদি হালকা তেল ব্যবহার করতে পারেন। নারকেল তেল, সরষের তেল কিংবা ক্যাস্টর অয়েল এড়িয়ে চলাই ভালো।
লেখা : সাদিয়া সারা