বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ফ্রিজি চুলের সমাধান

ফ্রিজি চুলের সমাধান

♦ মডেল : সিনথি ♦ ছবি : মনজু আলম

শীত পড়তেই চুলের নানা সমস্যা মাথাচাড়া দেয়। তন্মধ্যে ফ্রিজি বা অবিন্যস্ত চুল অন্যতম। এটি অনেকেরই নিত্যদিনের সমস্যা।  তাই ঘরোয়া যত্নে চুলে আনুন কোমলতার পরশ...

 

সাধারণ কারণ...

নানা কারণেই ফ্রিজি চুলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। হেয়ার রিবন্ডিং, হেয়ার কালার এমনকি কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টেও। হেয়ার পোরোসিস ওপেন থাকলে চুলের ভিতরের নিউট্রিশনগুলো ওয়াশড আউট হয়ে যায়। ফলে চুলে হয় নিষ্প্রাণ। তখনই চুল ফ্রিজি হয়।

শীতকালে কেন হয়?

শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা কমতে শুরু করে। এর প্রভাব পড়ে স্ক্যাল্পেও। ঠিক যেমন ত্বক তার প্রাকৃতিক আর্দ্রতা খোয়াতে শুরু করে, তেমনই রুক্ষ হয়ে ওঠে স্ক্যাল্পও। ফলে চুলও খুব সহজে ফ্রিজি ও শুষ্ক হয়ে যায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু নিয়ম মেনে চুলের যত্ন নিলেই সমস্যা সমাধান সম্ভব।

 

ফ্রিজি চুলের সমাধান

ফ্রিজি হেয়ার কেয়ারে পারলারগুলো অনেক ধরনের ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকে। তবে এর পুরোটাই নির্ভর করে চুলের ধরন এবং ফ্রিজিনেসের ওপর। অর্থাৎ চুলে ফ্রিজিনেস কতটুকু তার ওপর ভিত্তি করে ট্রিটমেন্ট হয়ে থাকে। আবার চুলের ধরন বুঝেও ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-  এক্সপার্টের পরামর্শ মেনে চলা। ট্রিটমেন্ট চলাকালীন তাদের পরামর্শে ভালো মানের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। শুধু পারলার নয়, বাড়িতেও সমানভাবে চুলের যত্ন জরুরি।

 

ফ্রিজি চুলে কোন তেল ব্যবহার করবেন এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের কিছু নেই। হাতের কাছে থাকা নারকেল তেলই যথেষ্ট। চাইলে আমন্ড অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে নারিকেল তেল বা আমন্ড হালকা গরম করে নিন। এরপর সেই কুসুম গরম তেল হালকাভাবে মাথার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। তারপর তোয়ালে কুসুম গরম পানি ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে পাঁচ মিনিট মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এতে সহজে চুলের গোড়ায় তেল ঢুকবে ও পুষ্টি জোগাবে। সবশেষে শ্যাম্পু করে নিন।

 

স্ক্যাল্প পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল চাইলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো সহজেই পাওয়া যায়। সম্ভব হলে জোজোবা অয়েলও দিতে পারেন। স্ক্যাল্পে পুষ্টি ফিরিয়ে আনতে এর জুড়ি নেই। ফ্রিজি হেয়ারের শ্যাম্পুটাও একটু ভিন্ন থাকা উচিত। এক্ষেত্রে মাইল্ড হার্বাল শ্যাম্পু বেছে নিতে পারেন। চুলে শ্যাম্পু লাগানোর পর ধীরে ধীরে চুলের গোড়ায় শ্যাম্পু লাগান। শ্যাম্পু করার পর ভালোভাবে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নেবেন। হালকা হাতে চুলে কন্ডিশনার ম্যাসাজ করুন।

ফ্রিজি চুলের জট ছাড়াতে বড় দাঁড়ার চিরুনি ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে কাঠের চিরুনি ভালো। তবে ভেজা চুল কখনোই আঁচড়াবেন না। চুল আধশুকনো হলে আঁচড়ান। ফ্রিজি চুল কখনোই একেবারে শুকনো অবস্থায় আঁচড়াবেন না।

 

নজর দিন ডায়েটে

চুল ভালো রাখতে প্রচুর ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন ই গ্রহণ করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে পাতে রাখা মাস্ট এই খাবারগুলোও- যেমন : কাঠবাদাম, আমন্ড, ফ্ল্যাক্স সিড এবং সানফ্লাওয়ার সিড ইত্যাদি।

নিয়মমাফিক গোসল

অত্যন্ত গরম পানি দিয়ে চুল ধোবেন না। এতে চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধুয়ে যায়। ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ে। এর পরিবর্তে কুসুম গরম পানি দিয়ে করতে পারেন। এ ছাড়াও শ্যাম্পুর পরে চুলে কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। খেয়াল রাখবেন, কন্ডিশনার যেন কোনোভাবেই স্ক্যাল্পে না লাগে।

প্রয়োজনীয় টিপস...

♦  নিয়মিত হায়ালুরনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ হেয়ার ক্রিম এবং সিরাম ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু করার পরই চুলে সিরাম বা ক্রিম লাগিয়ে নিন। রাতেও এগুলো লাগিয়ে ঘুমতে পারেন।

♦  সপ্তাহে দুই দিন চুলে তেল মালিশ করতে পারেন। এরপর অন্তত চার ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোনো প্রাকৃতিক তেলই স্ক্যাল্পের আর্দ্রতার জন্য ভালো।

খেয়াল রাখুন

♦  চুলে স্ট্রেটনার হেয়ার টুল ব্যবহার করার আগে অবশ্যই হিট প্রোটেক্টিং সিরাম লাগিয়ে নেবেন।

♦   চুলে ঘন ঘন ব্লো ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না। একান্তই ব্যবহার করতে হলে কুল মোডে রেখে ব্যবহার করুন।

সর্বশেষ খবর