বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

আশ্চর্য আয়ুর্বেদ তিলের তেল

আশ্চর্য আয়ুর্বেদ তিলের তেল

মডেল : সিনথি

কথিত আছে, মৃত্যু ছাড়া সব রোগের উপশম তিলের তেল। প্রাচীনকাল থেকেই দেহের রোগ মুক্তির কবচ হিসেবে কাজ করে আসছে। কিছু তেল আছে যা সব সময়ই পরিচিত, ভীষণ কার্যকর। তন্মধ্যে তিলের তেল অন্যতম। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে সিন্ধু উপত্যকায় তিলের তেলের উদ্ভব। সেখানকার বাসিন্দারা তেলের জন্যই তিলের চাষ করত। খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ সালে এই তেল গোটা বিশ্বে রপ্তানি করা হতো বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তী সময়ে এশিয়াজুড়ে জায়গা করে নেয় এই প্রাকৃতিক শস্য।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিনের রান্নায় তিলের তেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যেমন- ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, ফাইবার, থায়ামিন, ভিটামিন বি৬, ফসফরাস, ট্রিপটোফেন এবং প্রোটিনে ভরপুর। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবেও তিলের তেলের কদর বিশ্বব্যাপী। গবেষণা বলছে, নিয়মিত তিলের তেলের ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ ও সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তিলের বীজে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সিসামল। যা দাঁত ও মুখের ভিতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া (স্ট্রেপটোকক্কাস মিউটেন্টস) থেকে সুরক্ষা দেয়। এতে রয়েছে অক্সিডেটিভ এবং ফ্রি র‌্যাডিক্যাল যা হৃদরোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। তিলের বীজ এবং তেলে থাকা কপার আর্থ্রাইটিস রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। আমেরিকান এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এর ম্যাগনেসিয়াম কলোরেকটাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। দৈনিক খাবারে ১০০ গ্রাম ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত রাখতে পারলে কলোরেকটাল ক্যান্সার কমে যায় ১২ শতাংশ।

তিলের তেল মুখত্বকের জন্য দারুণ। এই তেল ত্বকে ম্যাসাজে অতিরিক্ত উত্তাপ কমে যায়। এর পুষ্টিকর জিঙ্ক দেহের কোষ বৃদ্ধি করে। হাত ত্বকের শুষ্কতা এবং পায়ের গোড়ালির ক্ষত সারায়। রাতে ঘুমানোর আগে ক্ষতযুক্ত স্থানে তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। তবে ম্যাসাজ শেষে অবশ্যই মোজা ব্যবহার করবেন। মাত্র সপ্তাহখানেক ব্যবহারে হাত ও পায়ের গোড়ালি ফিরে পায় হারিয়ে যাওয়া সতেজতা।

রূপ বোদ্ধাদের মতে, তিলের তেল ত্বকের যত্নে সারা বছরই ব্যবহার করা সম্ভব। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে, রুক্ষতা দূর করে এবং ত্বকের নানা সমস্যার সহজ সমাধান দেয় তিলের তেল। প্রতিদিন তিলের তেল ম্যাসাজে মুখে রক্ত চলাচল বাড়ায় ও ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। ত্বকের মৃত কোষ তুলে ত্বককে সতেজ রাখে এবং ত্বকের রোদে পোড়া ভাবও দূর করে তিলের তেল। হাতের কনুই, পায়ের হাঁটু ইত্যাদি রুক্ষ হয়ে গেলে এই তেল মালিশ করলে খুব তাড়াতাড়ি ত্বক নরম ও মসৃণ হয়ে যাবে। তিলের তেল মুখত্বকের জন্য দারুণ ময়েশ্চারাইজার। মুখ ধুয়ে এই তেল ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এরপর ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। গোসলের আগে এটি ব্যবহার করতে পারলে ভালো ফল পাবেন। এ ছাড়া ত্বকের যত্নে হলুদ বাটার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন। এই তেল হালকা গরম করে চুলে ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে আছে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড ওমেগা-৩। এটি চুলে পুষ্টি জোগায়, চুল দেখায় প্রাণবন্ত। চুল পড়ে যাওয়া, খুশকি, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, অকালে চুল পেকে যাওয়া, ড্রাই স্ক্যাল্প ইত্যাদি সমস্যার সমাধান করে।

 

লেখা : সাদিয়া সারা

সর্বশেষ খবর