বুধবার, ২২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুতিতে আরাম

সুতিতে আরাম

পোশাক ও ছবি : রঙ বাংলাদেশ

গরম যেখানে মাত্রাতিরিক্ত, পোশাকের বিলাসিতা সেখানে অর্থহীন। তবে প্রকৃতি ও পরিবেশের সমন্বয়ে পোশাক নির্বাচন করলে মিলবে আরাম। পাশাপাশি বজায় থাকবে হালের ফ্যাশনও। আর হ্যাঁ, গরমে জর্জেট, সাটিন বা ভারী কাপড়ের পোশাক এড়িয়ে যাওয়া উচিত...

তীব্র গরমে এমনিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত। এ সময় পোশাকেও যদি স্বস্তি না পাওয়া যায় তাহলে কি চলে? পরিবেশের কথা মাথায় রেখে পোশাক নির্বাচন করা উচিত। প্রকৃতি ও পরিবেশ দুটোর সমন্বয়ে পোশাক নির্বাচন করলে তা শরীরেও দেবে আরাম। আর গ্রীষ্মকাল মানে সুতি পোশাক। চাঁদিফাটা রোদে আর চিটচেটে ঘাম গায়ে সুতির পোশাকই আরামদায়ক। সেই সুতির পোশাক যদি সাদা বা কোনো হালকা রঙের হয় তাহলে সেটি আরও আরামদায়ক।

অনেকের ধারণা সুতি কাপড়ের পোশাকে নিজেকে স্টাইলিশভাবে উপস্থাপন করা যায় না। এ ধারণাটা ভুল। রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার সৌমিক দাস বলেন, সময়, স্থান, কাল এবং পাত্র বিবেচনায় আজকালের ডিজাইনাররা তাদের পোশাকের ডিজাইন ও নকশা তৈরি করে থাকে। মূলত সব প্রজন্মের উপযোগী ফ্যাশনেবল পোশাকও তৈরি করা যায় ডিজাইনে নতুনত্ব এনে। তবে ফ্যাশনে মেলে পূর্ণতা। ফলে সময়, স্থান, কাল এবং পাত্র বিবেচনায় রঙ বাংলাদেশ ক্রেতাদের জন্য নিয়ে আসে পছন্দনীয় এবং আরামদায়ক পোশাক।

দেশালের স্বত্বাধিকারী ইশরাত জাহান সব সময়ই ভালোবেসে এসেছেন সুতি শাড়ি। এ উপকরণের ওপর তার এক ধরনের ভালো লাগা আর আস্থা গড়ে উঠেছে। যেকোনো মৌসুমেই তার কাছে সুতির শাড়ি আরামদায়ক। চকচকে ভাব না থাকার কারণে আরও বেশি ভালো লাগে, জানালেন ইশরাত জাহান। পাড়, আঁচলে একটা মজার বিন্যাস থাকে। যারা সুতির শাড়ি পরেন, তারা এ অনুভূতি বুঝবেন।

 

কেন সুতির পোশাক?

সুতি কাপড় গরমে সবচেয়ে আরামদায়ক পোশাক। সুতি কাপড়ে অতি দ্রুত ঘাম শুষে নেয়। পাতলা তন্তুজ দিয়ে তৈরি হওয়ায় খুব সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। ভারী তন্তুজের ভিতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে না। সুতি কাপড়ে রয়েছে উচ্চ পানি শোষণ ক্ষমতা। কটনের হাইড্রোফিলিক প্রোপার্টি অন্য যেকোনো ফাইবারের থেকে বেশি। হাইড্রোফিলিক বলতে সহজ ভাষায় পানির প্রতি আকর্ষণ বা পানির প্রতি ভালোবাসা বুঝায়। কটন ফাইবার নিজের ওজনের ২৪ থেকে ২৭ গুণ পরিমাণ বেশি পানি শোষণ করতে পারে। আর এ কারণেই কটন দিয়ে তৈরি সুতি পোশাক খুব সহজেই শরীরের ঘাম শুষে নেয়। ফলে শরীরে চিটচিটে ভাব তৈরি না করে দেয় আরামদায়ক অনুভূতি। তাই সবদিক থেকে গরমের সবচেয়ে আরামদায়ক পোশাক সুতি কাপড়ের পোশাক। সে হোক সালোয়ার-কামিজ কিংবা কুর্তি বা ফ্রক কখনো প্রয়োজনে শাড়ি।

 

নকশার ভিন্নতায় অনন্য

অনেকে এভাবেই একই ধরনের সুতি কাপড়ের ওপর কি-ই বা ডিজাইন করা যাবে বা সেই ডিজাইন কেমন হবে! বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস এবং অনলাইন ফ্যাশন হাউস সব জায়গায় গরমের সুতি কাপড়ের ডিজাইন এবং কাপড়ের সমাহার তৈরি করেছে। তাই ডিজাইন নিয়ে কোনো ধরনের চিন্তার কারণ নেই। ভেজিটেবল বাটিক, স্কিন প্রিন্ট, টাই-ডাই ব্লক, এমব্রয়ডারি প্রভৃতি অনেক ধরনের কাপড় রয়েছে। তার মধ্যে আছে বিভিন্ন নান্দনিক ডিজাইন। এছাড়াও ড্রেসে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্যাটার্ন এবং বিভিন্ন ধরনের ছাট, ডিজাইন প্রভৃতি। কাপড় বা কালেকশন কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।

শপিংমলগুলোতে আজকাল টিউনিক, লম্বা টিউনিক, টপ, ভিন্ন ধাঁচের কামিজ পাওয়া যায়। চেক বা ডোরাকাটা (স্ট্রাইপড) কাপড়ের পোশাকে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে নানাভাবে। কিছু পোশাকে হয়তো দুভাবে রয়েছে একই স্ট্রাইপ, যাতে পোশাকটির এই দুই অংশের স্ট্রাইপের প্যাটার্ন আলাদা বলে মনে হয়। চেক কাপড়ের ওপর কোথাও একরঙা কাপড় ব্যবহার হয়েছে। সুতির পোশাকের কলার এবং হাতার কাজেও রয়েছে ভিন্নতা। কোনোটার কলার একটু উঁচু; কোনোটার গলা গোল, কোনোটার আবার ভি-আকৃতির। কোনোটার গলার সামনে ও পেছনে খানিকটা বাড়তি অংশ। ব্যবহার করা হয়েছে সামনে কলার, পেছনে ফিতা।

পাজামার বেলায়ও এখন নানারকম কাট। ঘারারা, ফ্লেয়ার প্যান্ট, ধুতি প্যান্ট, পাতিওয়ালা সালোয়ার, হারেম প্যান্ট ছাড়াও স্কার্ট, র‌্যাপ স্কার্ট (পাজামার মতো দুই পায়ে আলাদাভাবে জড়িয়ে থাকে) বানানো হচ্ছে সুতি কাপড়ে।

 

সুতি পোশাকের অনুষঙ্গ

পোশাকের সঙ্গে গয়না ও অন্যান্য অনুষঙ্গ নির্ভর করে নিজের ওপর। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যক্তিত্ব, সময় আর কোথায় যাচ্ছেন- এসব বিষয় মাথায় রেখে গয়না বা অনুষঙ্গ বেছে নিতে হবে। সকালে কাজে বেরোলে বড় একটা ব্যাগ হতে পারে সঙ্গী। আবার রাতের অনুষ্ঠানে ছোট ব্যাগ নিলেই হচ্ছে। সুতি পোশাকের সঙ্গে কাচের চুড়ি, সুতার চুড়ি ও দেশীয় মালা বেশ মানানসই। রুপা, কাঠ, পুঁতি, কাপড় ও দেশীয় নানান উপকরণে তৈরি গয়না পরা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর