বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

উপটানে উজ্জ্বলতা

উপটানে উজ্জ্বলতা

মডেল : শশী, ছবি : মনজু আলম

সাধারণত দুধ, বেসন বা চালের গুঁড়ো এবং হলুদ মিশিয়ে এ প্যাকটি তৈরি করা হয়। যা প্রাচীনকাল থেকেই ত্বকের উজ্জ্বলতায় ব্যবহার হয়ে আসছে...

আধুনিক প্রসাধনীর ভিড়ে খুব কমই দেখা মেলে রূপবোধনের অন্যতম সামগ্রী উপটানের। অথচ প্রাচীনকাল থেকেই উপটান রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন ভেষজ উপাদান, হলুদ, বেসন ও বাদামের গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি করা হতো এই রূপচর্চার পণ্য। পানিতে গুলে পেস্ট তৈরি করে মুখে মালিশ করে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই যথেষ্ট। ত্বকে ফিরে আসে স্বাভাবিক লাবণ্যতা।

একটু সহজ ভাষায় বলতে গেলে, উপটান হলো- এক ধরনের প্যাক। সাধারণত দুধ, বেসন বা চালের গুঁড়ো এবং হলুদ মিশিয়ে এ প্যাক তৈরি করা হয়। এর আবির্ভাব কিন্তু একেবারে প্রাচীনকালে বৈদিক যুগে। শুধু মুখে লাগানোর জন্যই নয়, বরং তখন উপটান রোগীর পথ্য হিসেবেও ব্যবহার হতো। ধীরে ধীরে এ উবটনের জনপ্রিয়তা এতটাই বাড়ে, যে তা এখনো রূপচচর্চায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উপটানের নানান উপকারিতার কথা জানান ভারতের ‘মাদার স্পার্শ’য়ের সহকারী প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিমাংশু গান্ধী। এটি ত্বকের কোনো ক্ষতি করে না। ত্বকের জেল্লা বাড়ানোর পাশাপাশি ত্বকের দাগ-ছোপ দূর করতে এবং ত্বকের অন্যান্য সমস্যা কমাতেও উপটান দারুণ কার্যকরী। নিয়মিত উপটান ব্যবহারে ত্বক সতেজ হয় ও উজ্জ্বলভাব আসে। ফলে ত্বকের বিবর্ণতা ঢেকে যায়। বাড়তি মেকআপের প্রয়োজন হয় না। তবে আজকাল দুধ, বেসনের সীমা ছাড়িয়ে নানা প্রাকৃতিক উপাদানেও তৈরি করা হচ্ছে উপটান। কাজ একটাই, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সারিয়ে ত্বককে আরও উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় করে তোলা।

 

ঘরোয়া উপটান

♦ ট্যানিং দূর করতে টম্যাটো খুবই উপকারী। পাশাপাশি বাড়ায় ত্বকের উজ্জ্বলতা। সব ধরনের ত্বক উপযোগী। ৪-৫টা পাকা টম্যাটো কুচি করে কেটে ম্যাশ করে নিন। এতে ৪-৫ টেবলচামচ টকদই, ১-২ টেবলচামচ মধু, ২-৩ টেবলচামচ ওটমিল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। পুরো শরীরে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। খানিকটা শুকিয়ে এলে সামান্য তেল ব্যবহার করে ঘষে তুলে ফেলুন। ত্বকের পোড়াভাব দূর হবে।

♦ রূপচর্চায় শসার উপকারিতা সবাই জানেন। ত্বককে নরম, কোমল এবং সতেজ রাখতে এটি অদ্বিতীয়। পাশাপাশি এর রসে আছে বিভিন্ন ফাইটোকেমিক্যালস যা ত্বকের কোলাজেন প্রোটিনের সংশ্লেষ বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক থাকে তারুণ্যদীপ্ত। একটা শসা কুচি করে নিন। এতে ৪-৬ টেবলচামচ টকদই, ২-৩ টেবলচামচ মধু, ২-৩ টেবলচামচ ওটমিল মিশিয়ে গোটা শরীর ম্যাসাজ করুন। ২৫ মিনিট রেখে কুসুম পরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

♦ অ্যাভোকাডো প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে আর্দ্র করে তোলে। এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বককে পুষ্টি জোগায়। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় তা ফ্রি-র‌্যাডিকাল থেকে হওয়া ক্ষতির হাত থেকেও ত্বককে সুরক্ষা দেয়। নিয়মিত এ উপটান হিসেবে ব্যবহারে বলিরেখা ও সূক্ষ্মরেখা থেকে মুক্তি পাবেন। একটা অ্যাভোকাডোর ক্বাথ, ২ টেবলচামচ মধু, ৪-৫ চাচামচ টকদই মিশিয়ে নিন। প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত মধু বা টকদই ব্যবহার করতে পারেন। মুখে এবং প্রয়োজনীয় অংশে এই মিশ্রণ লাগান। মিশ্রণ শুকিয়ে এলে ঘষে তুলে ফেলুন। সামান্য তেলও ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক নরম ও আর্দ্র থাকবে।

লেখা : নূরজাহান জেবিন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর