বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বর্ষায় অদলবদল

বর্ষায় অদলবদল

লেখা : শোভন সাহা (কসমোলজিস্ট), মডেল : উম্মে মায়া বৃষ্টি, ছবি : মাহমুদুর রহমান চৌধুরী

সব প্রসাধনী সব ঋতুতে কাজ করবে- এমনটা নয়। আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বক পরিচর্যার প্রসাধনীতেও পরিবর্তন আনতে হবে

সাধারণত বর্ষায় ত্বক একটু বেশি তৈলাক্ত দেখায়। ফলে ব্রণ, অ্যাকনে বেড়ে যায়। তাছাড়া গুমোট আবহাওয়ার কারণে র‌্যাশ, ছুলি, ফাঙ্গাল ইনফেকশনের মতো চর্মরোগ তো আছেই। সঙ্গে ফ্রিজি হেয়ার, ড্যানড্রাফ, হেয়ার ফলও ভাবিয়ে তোলে। বর্ষায় পানিবাহিত রোগ যেমন- সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদিও অনেক সময় ত্বক ও চুলে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই এ সময় প্রয়োজন কিছু পরিবর্তন। দরকার লাইফস্টাইলের অদলবদল।

এ প্রসঙ্গে ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের মুম্বাইয়ের ‘স্কিনল্যাব ক্লিনিক্স’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. যমুনা পাই বলেন, ‘চকচকে ও ঘন নয় বরং হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে বর্ষাকালে।’

 

বর্ষায় ডায়েট প্ল্যান

এ সময় প্রচুর পানি পান করতে হবে। ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিনযুক্ত ফল এবং শাকসবজি খেতে হবে বেশি বেশি। যেহেতু বর্ষায় এমনিতেই ত্বক তৈলাক্ত থাকে, তাই অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, তেল-চর্বি যুক্ত খাবারদাবার এড়িয়ে চলুন। এ সময় বাইরের উন্মুক্ত খাবার একেবারেই খাওয়া ঠিক নয়। দেহে ভিটামিন ‘এ’র ঘাটতি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নিন।

 

রূপচর্চায় আয়ুর্বেদ

বর্ষাকালে আয়ুর্বেদিক প্রসাধনী ভালো কাজ করে। তবে এ সময় গরমের ক্লিনজার বদলে বেছে নিন ক্রিমি ক্লিনজার। প্রতিদিন ফেসওয়াশ হিসেবে নিম, তুলসী, হলুদের নির্যাসযুক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন।

 

আয়ুর্বেদিক টোনার

বৃষ্টির দিনে প্রাকৃতিক টোনার সবচেয়ে বেশি উপকারী। এ ক্ষেত্রে গোলাপজল হতে পারে আদর্শ। এ ছাড়াও গাজর, আলু, আনারসের নির্যাস সমৃদ্ধ টোনারও ব্যবহার করতে পারেন। র‌্যাশ বা ব্রণের সমস্যায় টোনার হিসেবে নিন নিম, তুলসী বা হলুদের নির্যাস।

 

আয়ুর্বেদিক বডিওয়াশ

নিম এবং তুলসীযুক্ত বডিওয়াশ বর্ষা মৌসুমের সংক্রমণ যেমন- র‌্যাশ, ছুলি ও ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে ভালো রাখবে। চন্দন ও হলুদযুক্ত বডিওয়াশ ধরে রাখবে আপনার ত্বকের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্যতা।

 

প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার

এই মৌসুমে অ্যালোভেরা, হলুদ, স্যাফরণ, টি-ট্রি অয়েলযুক্ত জেল, ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার করতে পারেন। আর এই আয়ুর্বেদিক উপাদানগুলো আপনার স্কিনকে হাইড্রেট করার সঙ্গে সঙ্গে রাখবে জীবাণুমুক্ত, ফ্রেশ এবং গ্লোয়িং।

 

শ্যাম্পুতেও সতর্কতা

বর্ষার পানি চুলের আর্দ্রতা কেড়ে নেয়। ফলাফল শুষ্ক, রুক্ষ আর বিবর্ণ চুল। তাই এ সময় সাধারণ শ্যাম্পু ব্যবহার না করাই ভালো। পরিবর্তে বেছে নিন সালফেটবিহীন শ্যাম্পু। যা পরিষ্কার করবে চুল। স্ক্যাল্পের ক্ষতি ছাড়া।

 

প্রাকৃতিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার

যারা চুলচর্চায় কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্টের প্রতি অনীহা রাখেন তারা টি-ট্রি অয়েল, নিমযুক্ত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। এ সময় হেয়ার পরিষ্কারের ক্ষেত্রে ডিপ ক্লিনজিং ভীষণ দরকার। শ্যাম্পুতে সালফেট থাকলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, যদি এটা চুলকে রুক্ষ না করে। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার করে অবশ্যই চুলে সেরাম লাগাতে হবে এবং হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল ভালোভাবে ড্রাই করে ফেলুন।

 

মেকআপ প্রতিদিন

একেকজনের ত্বক একেক ধরনের। তাই ত্বক বুঝে মেকআপ করা উত্তম।

 

ম্যাট ফাউন্ডেশন

বর্ষায় ত্বকে প্রথমে ম্যাট প্রাইমার দিয়ে ম্যাট ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করতে হবে। এরপর ম্যাট কমপ্যাক্ট পাউডার। শেষে লং লাস্টিং ইফেক্টের জন্য ব্যবহার করতে পারেন মেকআপ ফিক্সার।

 

ওয়াটারপ্রুফ লাইনার, কাজল, মাশকারা

বর্ষার পানি এবং গরমে ঘেমে-নেয়ে যাতে চোখের সাজ নষ্ট হয়ে না যায় বা ঘেঁটে না যায়, তার জন্য ওয়াটারপ্রুফ আইলাইনার, কাজল, মাশকারা ব্যবহার করতে হবে।

 

হাইড্রেটিং নিপকালার বা বাম

বর্ষাকালে গ্লসি, অয়েলি নয়, এমন লিপবাম বা লিপকালার ব্যবহার করাই উত্তম। তা অবশ্যই হাইড্রেটিং হতে হবে।

 

আয়ুর্বেদিক মেকআপ রিমুভার

বৃষ্টির দিনগুলোয় মেকআপ তোলার জন্য টি-ট্রি অয়েল বা ল্যাভেন্ডার অয়েলযুক্ত মেকআপ রিমুভার দিয়ে মেকআপ তুলে ফেলতে হবে। এটি মেকআপ তোলার সঙ্গে সঙ্গে স্কিনকে রাখবে জীবাণুমুক্ত। প্রতিবার মেকআপ শেষে মেকআপ ব্রাশ বা টুলসগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

 

বর্ষায় মেকআপ ব্যাগ

মেকআপের উপকরণগুলো রাখার ব্যাগও হওয়া চাই ওয়াটারপ্রুফ বৃষ্টি আর আর্দ্রতা থেকে বাঁচাতে। কারণ, এ দুটোই মেকআপের বড় দুশমন। ওয়াটারপ্রুফ জিপড পাউচ এ ক্ষেত্রে ভালো।

 

মনে রাখুন

♦ বর্ষার মৌসুমে চটজলদি টাচ আপের জন্য সঙ্গে রাখুন অয়েল ব্লটিং শিট।

♦ ওয়াটারপ্রুফ মেকআপে সব সময় চাই ব্রাশের ব্যবহার। এতে করে নিখুঁত, সুন্দর ফিনিশিং পাওয়া যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর