বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা

টাটার নতুন কাণ্ডারি

টাটার নতুন কাণ্ডারি
বিশ্বের অন্যতম ও ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক শিল্পগোষ্ঠী টাটার চেয়ারম্যান সাইরাস পাল্লোনজি মিস্ত্রি। গত ২৮ ডিসেম্বর ৪৮ বছর বয়সী সাইরাস মিস্ত্রি এ দায়িত্ব হাতে নেন। টাটা সান্সের সাবেক চেয়ারম্যান রতন টাটার উত্তরাধিকারী হিসেবে যখন সাইরাস মিস্ত্রির নাম ঘোষণা করা হয়, তখন ভারতসহ বিশ্বের বেশির ভাগ সংবাদপত্র, সাময়িকী বা টিভি চ্যানেল সাইরাসের নিয়োগকে 'অপ্রত্যাশিত' ও 'অনাকাঙ্ক্ষিত' হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মূলত সাইরাসের স্বল্প পরিচিতিই এর কারণ। সাইরাস মিস্ত্রি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর রতন টাটা বলেছিলেন, সাইরাসের যোগ্যতা ও ধীশক্তিতে তিনি মুগ্ধ। তার বিচক্ষণতা ও বিনয়ের প্রশংসাও করেন তিনি। কার্যত টাটায় যোগ দেওয়ার আগে সাইরাস পরিচিত ছিলেন ভারতের নির্মাণ ব্যবসায়। পেশাগত জীবনে টাটা ছাড়া আর কোনো বড় গ্রুপের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে টাটা গ্রুপের একটি প্রভাবশালী কমিটি সাইরাসকে রতন টাটার উত্তরাধিকার হিসেবে বাছাই করে। পাল্লোনজি সাপুরজি মিস্ত্রি ও পাটসি পেরিন দুবাস দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান সাইরাস মিস্ত্রি। ১৯৬৮ সালের ৪ জুলাই মুম্বাইয়ের বিখ্যাত পার্সি পরিবারে তার জন্ম। জরাথ্রুস্ট ধর্মানুসারী সাইরাসের মা পাটসি ছিলেন একজন আইরিশ। তাই সাইরাস নিজেকে আইরিশ হিসেবেই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সাইরাস পড়াশোনা করেন মুম্বাইয়ের ক্যাথেড্রাল অ্যান্ড জন কোনান স্কুল থেকে। এরপর মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ থেকে স্নাতক পাস করেন তিনি। পরে লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজে থেকে পুরকৌশলে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর পাস করেন লন্ডন স্কুল অব বিজনেস থেকে। বাবা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে সাইরাস মুম্বাইয়ের সমুদ্র তীরে মালাবার হিলের একটি বাসায় বাস করেন। সাইরাস বিয়ে করেছেন প্রখ্যাত আইনজীবী ইকবাল চাকলার কন্যা রোহিকা চাকলাকে। প্রায় ২০ বছরের কর্মজীবনে সাইরাস নির্মাণ প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিনোদন, বিদ্যুৎ ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। সাইরাস ১৯৯১ সালে তাদের পারিবারিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সাপুরজি পাল্লোনজি অ্যান্ড কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। ভারতের সবচেয়ে ধনী পরিবারগুলোর তালিকায় মিস্ত্রি পরিবারের অবস্থান সপ্তম। তাদের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৭৬০ কোটি ডলার (৬০ হাজার ৬২১ কোটি টাকা)। তিন বছর পর, সাইরাস ওই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে নিয়োগ পান। তার সময়ে ওই গ্রুপের নির্মাণ ব্যবসা দুই কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১৫০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। টাটার দায়িত্ব সাইরাসের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে তিনি কতটা সফল হতে পারেন, দেখার বিষয় সেটাই।

সর্বশেষ খবর