শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

লাইলি-মজনু

লাইলি-মজনু

লাইলি ও মজনু আমাদের দেশে সবচেয়ে আলোচিত প্রেম কাহিনী। যদিও কালজয়ী এই প্রেমের কাহিনীর সত্যাসত্য নিরূপণ করা এখন অনেকটাই কষ্টসাধ্য। সময়ের বিবর্তনে নানা জাতি আর নানা দেশের মানুষের মুখে মুখে লাইলি-মজনুর গল্প বিবর্তিত হয়েছে নানাভাবে। যদিও অধিকাংশ কাহিনীতেই নায়ক মজনু আবিভর্ূত হয়েছেন একজন রাজপুত্র ও কবি হিসেবে। আর অধিকাংশের মতেই এটি কোনো কল্পকাহিনী নয়। আমরা যাকে মজনু বলে জানি তার নাম আসলে কায়েস ইবনে আল- মুল্লাওয়াহার। উমাইয়া শাসন আমলে অর্থাৎ ৭ শতকের এ প্রেম কাহিনী সাহিত্যে স্থান পায় ১২ শতকে মহাকবি নেজামির 'লাইলি মজনু' সাহিত্যকর্মে।

স্বর্গীয় প্রেমের প্রতীক মানা হয় এই লাইলি-মজনু জুটিকে। বিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে লাইলী এবং কায়েস একে-অন্যের প্রেমে পড়েন। তাদের প্রেম সমাজের নজরে এলে দুজনের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ হয়ে যায়। নিঃসঙ্গ কায়েস মরুপ্রান্তরে নির্বাসনে যান। কায়েসের ক্ষ্যাপাটে আচরণের জন্য তাকে ডাকা হতো মজনু (পাগল) নামে। মরুভূমিতে এক বৃদ্ধ বেদুইন লড়াই করে লাইলিকে পাওয়ার জন্য কায়েসকে প্রেরণা দেন। একসময় লাইলীর গোত্র ক্ষমতাচ্যুত হয়, কিন্তু তারপরও লাইলির বাবা কায়েসের সঙ্গে লাইলির বিয়েতে সম্মতি দেন না। কথিত আছে, লাইলির পিতা মজনুকে আহত করলে লাইলিও আহত হতো, এমনই ছিল তাদের সেই স্বর্গীয় প্রেম। কিন্তু মজনুকে মরুভূমিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে বেদুইনের দল মজনুর হার না-মানা ভালোবাসা দেখে তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। তারা লাইলীর বাবাকে যুদ্ধে হারিয়ে দেয়। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। লাইলীকে তার পিতা জোর করে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর লাইলী মজনুর কাছে ফিরে আসে, কিন্তু প্রচণ্ড দুঃখ আর অনাহারে মজনু মারা যায়। লাইলী ও তার ভালোবাসা মজনুর পথ অনুসরণ করে। মৃত্যুর পর তাদের পাশাপাশি সমাধিস্থ করা হয়। স্বর্গে গিয়েও ভালোবাসার মানুষকে চাওয়ার তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের আকুতি এই কাহিনীকে অমর করে রেখেছে।

 

 

সর্বশেষ খবর