শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

শিরি ফরহাদ

শিরি ফরহাদ

এই তালিকায় গ্রিক পুরাণের বাইরের আরেকটি শিরি আর ফরহাদের গল্প। বছরের পর বছর ধরে শিরি আর ফরহাদের অমর প্রেমের গল্প মানুষের মুখে মুখে চর্চিত হয়ে আসছে। এটি মূলত প্রাচীন ইরানি লোকগাথা। এ গল্পটি নানা সময় নানা বর্ণনায় অনেকটাই বিবর্তিত হয়েছে। তবে বিবর্তনের পরও অধিকাংশ গল্পে এর কিছু মিল পাওয়া যায়। সেই সূত্রগুলো অনুসারে শিরিন বা শিরি ছিলেন একজন রানী বা রাজকন্যা। কিন্তু বিভ্রান্তি আছে নায়ক ফরহাদের পরিচয় নিয়ে। একটি সূত্র মতে, ফরহাদ ছিলেন নদীর বাঁধ নির্মাণের একজন শ্রমিক। ঘটনাচক্রে ফরহাদের কাছে নায়িকা শিরি বলেছিল, 'তুমি যদি ওই নদীতে বাঁধ তৈরি করতে পার তাহলেই আমাকে পাবে।' ফরহাদ শিরিকে পাওয়ার জন্য এ অসম্ভবকে সম্ভব করার আশায় কাজে নামে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে বাঁধ ভেঙে জলের তোড়ে মারা যায় ফরহাদ। আর তার দুঃখে শিরিও পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্দহত্যা করে। অন্যদিকে আরেকটি ফরহাদকে দেখানো হয়েছে একজন গুণী ভাস্কর হিসেবে। তবে তার মধ্যে অহঙ্কার ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন তার বানানো মূর্তির চেয়ে সুন্দর আর কিছুই হতে পারে না। কিন্তু ফরহাদের এ অহঙ্কার ভেঙে চুর হয়ে যায় কোহে আরমান রাজ্যের রাজকন্যা শিরির হাতে অাঁকা একটি ছবি দেখে। আর শিরিও ছিলেন অসীম সুন্দরী। শিরির রূপে পাগলপ্রায় ফরহাদ তখন একের পর এক শিরির মূর্তি গড়তে শুরু করেন। এক দিন ফরহাদের সঙ্গে সামনাসামনি দেখাও হয়ে যায় শিরির। কিন্তু রাজ্য আর ক্ষমতার কারণে ফরহাদের প্রেমকে অস্বীকার করেন শিরি। কিন্তু শিরির এ প্রত্যাখ্যান ফরহাদকে নতুন করে পাগল করে তোলে। ফলে শিরির স্মৃতি ভাস্কর হিসেবে বেসাতুন পবর্তকে গড়ে তুলতে কঠোর পরিশ্রম শুরু করেন ফরহাদ। ফরহাদের এ পাগলামোর গল্প শুনে আর স্থির থাকতে পারলেন না শিরি। সিংহাসনের মায়া ত্যাগ করে তিনিও ছুটে যান ফরহাদের কাছে। পরবর্তীতে এক ভূমিকম্পে দুজনই একসঙ্গে প্রাণ হারায়।

ফরহাদ নামটিকে অনেকেই কল্পিত বললেও শিরিন ছিল সাসানিদ বংশীয় পারসিক শাহানশাহ্ দ্বি্বতীয় খসরু পারভেজের (শাসন কাল ৫৯১- ৬২৮) স্ত্রী। তাদের প্রেম কাহিনী স্থান পেয়েছে পারস্যের মহাকবি ফেরদৌসির শাহানামায়।

 

 

সর্বশেষ খবর