রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

চারুকলার মঙ্গলশোভাযাত্রা

চারুকলার মঙ্গলশোভাযাত্রা

মঙ্গলশোভাযাত্রা ছাড়া বৈশাখী উৎসবের কথা ভাবাই যায় না। ঢাকার বৈশাখী উৎসবে মঙ্গলশোভাযাত্রা তাই রয়েছে আপন গরিমায়। সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে মঙ্গলশোভাযাত্রা বৈশাখী উৎসবে এনে দেয় সর্বজনীন উৎসবের স্বাদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে সকালে এই শোভাযাত্রাটি বের হয়। বর্ণিল এ শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ঘুরে প্রাণবন্ত করে তোলে শহুরে আবহাওয়া। উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয় সর্বত্র। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মঙ্গলশোভাযাত্রা ঠিকানা খুঁজে নেয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রাঙ্গণে। এ শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবন এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয় বিভিন্ন উপস্থাপনায়। মঙ্গলশোভাযাত্রায় সব শ্রেণী-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় রং-বেরঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিলিপি। ১৯৮৯ সাল থেকে এ মঙ্গলশোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখ উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ হয়ে আছে। মঙ্গলশোভাযাত্রার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে মেলার কথা না বললেই নয়। আবহমানকাল থেকেই এসব মেলা বাঙালির প্রাণের উৎসবে যোগ করেছে অনন্য মাত্রা। বৈশাখী মেলার সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈচিত্র্যের বউমেলা। ঈশা খাঁর সোনারগাঁয়ে ব্যতিক্রমী বউমেলা বসে প্রতি বছর। জয়রামপুর গ্রামের মানুষের ধারণা, কমপক্ষে শত বছর ধরে পহেলা বৈশাখে শুরু হওয়া এ মেলা পাঁচ দিনব্যাপী চলে। প্রাচীন একটি বটবৃক্ষের নিচে এ মেলা বসে, যদিও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সিদ্ধেশ্বরী দেবীর পূজা হিসেবে এখানে সমবেত হয়। বিশেষ করে কুমারী, নববধূ, এমনকি জননীরা পর্যন্ত তাদের মনস্কামনা পূরণের আশায় এ মেলায় এসে পূজা-অর্চনা করেন। সন্দেশ-মিষ্টি-ধান-দূর্বার সঙ্গে মৌসুমি ফলমূল নিবেদন করেন ভক্তরা। বউমেলা ছাড়াও বৈচিত্র্যের মেলা বলা যেতে পারে 'ঘোড়ামেলাকেও'। এ মেলাটি সোনারগাঁ থানার পেরাব গ্রামের পাশে আয়োজন করা হয়। লোকমুখে প্রচলিত জামিনী সাধক নামের এক ব্যক্তি ঘোড়ায় চড়ে এসে নববর্ষের এই দিনে সবাইকে প্রসাদ দিতেন এবং তিনি মারা যাওয়ার পর ওই স্থানেই তার স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হয়। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে স্মৃতিস্তম্ভে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা একটি করে মাটির ঘোড়া রাখে এবং এখানে মেলার আয়োজন করা হয়। এ কারণে লোকমুখে প্রচলিত মেলাটির নাম ঘোড়ামেলা। এ মেলার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে- নৌকায় খিচুড়ি রান্না করে রাখা হয় এবং আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই কলাপাতায় আনন্দের সঙ্গে তা ভোজন করে। সকাল থেকেই এ স্থানে লোকজনের আগমন ঘটতে থাকে। শিশু-কিশোররা সকাল থেকেই উদগ্রীব হয়ে থাকে মেলায় আসার জন্য। এক দিনের এ মেলাটি জমে ওঠে দুপুরের পর থেকে। -রকমারি ডেস্ক

 

সর্বশেষ খবর