মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকায় আবর্জনার জঞ্জাল

সাঈদুর রহমান রিমন

কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকায় আবর্জনার জঞ্জাল

ছবি : রোহেত রাজীব

রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকা এখন নোংরা-আবর্জনা, পূতিগন্ধের জঞ্জালময় জায়গায় পরিণত হয়েছে। যেখানে-সেখানে ময়লার স্তূপ। ফ্লাইওভারের নিচের অংশে গড়ে উঠেছে বাস-ট্রাক, প্রাইভেট কারের অঘোষিত টার্মিনাল। সরকারি জায়গা, ব্যস্ততম রাস্তা ও রেলক্রসিং জুড়ে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য দোকানপাট, ঝুপড়ি বস্তির নানা স্থাপনা। ফ্লাইওভারকে ঘিরে মনোমুগ্ধকর পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার সব ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও রাজউকের ব্যর্থতায় সব ভেস্তে যেতে বসেছে। ফ্লাইওভার নির্মাণ শেষে তা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর থেকেই গোটা এলাকাটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়।

 

 

রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ বিকালে দল বেঁধে কুড়িলে এসে হাজির হতেন ঘুরে বেড়াতে।

সন্ধ্যার পর থেকেই ফ্লাইওভারজুড়ে নিয়নের আলোতে চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হতো। কিন্তু সে দৃশ্যপট এখন পাল্টে গেছে। ফ্লাইওভারের নিচে কোনায় কোনায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। উৎকট দুর্গন্ধে এলাকার বাতাস পর্যন্ত ভারি হয়ে থাকে। এখন ফ্লাইওভার অতিক্রমকালে দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পেতে গাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকে না। বাকিরা নাকে-মুখে রুমাল চেপে অতিকষ্টে জায়গাটি পেরোতে বাধ্য হন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নিযুক্ত ময়লার ঠিকাদার কুড়িল ও খিলক্ষেতসহ আশপাশ এলাকার যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা নিয়ে ফ্লাইওভারের নিচে নানা স্থানে ফেলছেন। সে ময়লা-আবর্জনা কাক-কুকুরের দল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আরও হতশ্রী পরিবেশের সৃষ্টি করে। ফলে মনোমুগ্ধকর এলাকাটি ঘুরে বেড়ানোর পরিবর্তে মানুষজন ওই এলাকা দ্রুত ত্যাগ করতেই ব্যস্ত থাকেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় সেখানে দুই শতাধিক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। সন্ধ্যা পেরোতেই বখাটে, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্যে কুড়িল ভীতিকর এলাকায় পরিণত হয়। শুধু ময়লা-আবর্জনা, দুর্গন্ধই নয়-হাজারো জঞ্জালে বড়ই বেহাল হয়ে আছে কুড়িল ফ্লাইওভার এলাকা।

ফ্লাইওভারের নিচে ব্যস্ততম রাস্তাজুড়েই গড়ে তোলা হয়েছে মিনিবাসের টার্মিনাল। রাস্তার উপরেই চলে গাড়ি ধোয়া মোছা ও মেরামতের কাজ। পূর্বপাশের গোটা রাস্তা দখল করেই গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ প্রাইভেট কার টার্মিনাল। বৈধ কাগজপত্রহীন, ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন দেড় শতাধিক প্রাইভেট কারের মাধ্যমে হরদম চলছে যাত্রী হয়রানি। এসব গাড়ি ভাড়ায় নেওয়া যাত্রীরা প্রায়ই ছিনতাই ও ডাকাতির কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়ালেও প্রতিকার পান না। মুক্তিযোদ্ধা পরিবহন মালিক কল্যাণ সমিতির ব্যানারে হাজী জালাল, শেখ হালিম, সিরাজসহ সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা অবৈধ প্রাইভেট কারের বাণিজ্য পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ স্ট্যান্ড ও টার্মিনালকে ঘিরে ছোট বড় ২০টি গ্যারেজ-ওয়ার্কশপের পাশাপাশি দুই শতাধিক দোকানপাটের বড় জঞ্জাল গজিয়ে উঠেছে।

 

সর্বশেষ খবর