মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আবর্জনার ডাম্পিং পয়েন্ট নেই গাজীপুর সিটিতে

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

আবর্জনার ডাম্পিং পয়েন্ট নেই গাজীপুর সিটিতে

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নিজস্ব কোনো ডাম্পিং পয়েন্ট নেই। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ মেট্রিক টন ময়লা ও বর্জ্য গাজীপুর সিটির বিভিন্ন অংশে জমা হয়। সিটি করপোরেশন এলাকায় শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এ ময়লার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। সিটি করপোরেশন বলছে, কড্ডা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে আবর্জনা ফেলার জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। আপাতত সেখানেই ময়লা ফেলা হচ্ছে। বর্তমানে সিটির বাসিন্দাদের ময়লা সড়ক-মহাসড়কের ওপর বিভিন্ন স্থাপনার সামনে ও আবাসিক এলাকায় ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া মহানগরের বাসিন্দারা স্বউদ্যোগেও বাসার ময়লা রাস্তার পাশে ফেলছেন। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মালেকের বাড়ি, ছয়দানা, টঙ্গীর চেরাগআলী বাজারের পাশে, টঙ্গী বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ বেশ কিছু স্থানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সংযোগস্থল চান্দনা চৌরাস্তার জাগ্রত চৌরঙ্গী ভাস্কর্যের পশ্চিম পাশে ও পূর্ব পাশে প্রকাশ্যে আবর্জনা ফেলা হয়। ঢাকা-গাজীপুর সড়কের পাশেই অবস্থিত ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সীমানা ঘেঁষে ফেলা হয় আবর্জনা। জেলা শহরের রেলক্রসিং, প্রধান ডাকঘরের পাশে, গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের পাশে, কাজী আজিম উদ্দিন কলেজের পাশের রাস্তা, জোড় পুকুরপাড়, সিটি করপোরেশনে প্রবেশের উত্তর রোডসহ

বিভিন্ন অলিগলিতে আবর্জনার স্তূপ জমা করা হয়। রাজবাড়ী-পূবাইল সড়কের রাজবাড়ী মাঠের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে এলাকাবাসীর ফেলে রাখা ময়লা দীর্ঘদিন ধরে জমা থাকলেও সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এসব স্থানের পাশ দিয়ে নগরবাসীকে নাকে রুমাল চেপে চলতে হয়। গাজীপুর শহরের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, নির্ধারিত ডাস্টবিন না থাকায় আবাসিক এলাকায় যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার খুব একটা পাওয়া যায়নি। শহরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশন শহর এলাকায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিংবা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় রিকশা-ভ্যানের মাধ্যমে বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ময়লা সংগ্রহ করে। প্রতিটি বাড়ি থেকে মাসে ৬০ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু মাসের প্রথম কয়দিন বাসা থেকে নিয়মিত ময়লা নিলেও পরে তা অনিয়মিত হয়ে যায়। সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র জানায়, ৫৭টি ওয়ার্ডের নগরীতে প্রায় ৩৫ লাখ লোকের বসবাস। এখানে হোল্ডিং রয়েছে ৭৮ হাজার ৩৩১টি। পাঁচটি জোনে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ট্রাক ২০টি, ভিম লিফটার দুটি, জিপগাড়ি চারটি, দুই কেবিনযুক্ত পিকআপ ভ্যান তিনটি, পরিচ্ছন্ন কর্মী ৬১০ জন কাজ করছেন। ডাস্টবিন রয়েছে মাত্র ৯২টি, হ্যান্ড ট্রলি ২০টি। গত কোরবানির ঈদে পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য সিটি করপোরেশন অতিরিক্ত ট্রাক ভাড়া করেছিল। প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কবীর আল আসাদ বলেন, জায়গা না পাওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ডাস্টবিন বসানো যায়নি। কোথাও জায়গা না থাকায় মহাসড়কের পাশে আবর্জনা রাখা হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত সিটি মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ জানান, আমরা ডাম্পিং পয়েন্ট কেনার জন্য বিভিন্ন স্পটে বা জোনভিত্তিক একটা কমিটিও গঠন করেছি। খুব শিগগিরই জায়গা সিলেকশন করা হবে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কড্ডার পাশে প্রায় ২০ বিঘা জমির ওপর অস্থায়ী ভিত্তিতে একটা ডাম্পিং পয়েন্ট করেছি। শিগগিরই অবস্থার উন্নতি হবে।

সর্বশেষ খবর